‘ফাঁসি কার্যকর সময়ের ব্যাপার মাত্র’
জামায়াত নেতা মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ফাঁসির নির্দেশ হয়েছে, সেটা এক্সিকিউট (কার্যকর) করার জন্য যা যা করণীয় আমরা করছি এবং অবশ্যই বিধি এবং আইন অনুযায়ী।’
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ ফাঁসি কার্যকরের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনাসহ আইন অনুযায়ী অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে।
আসাদুজ্জামান খাঁন আরো জানান, কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকরকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা নেই। তিনি বলেন, ‘কিছু যদি করে এই যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে তাহলে জনগণই তাদের গণধোলাই দেওয়া...শুরু হয়ে গেছে আপনারা সেটা দেখেছেন। আমাদের পুলিশ, আমাদের প্রশাসন, আমাদের বিজিবি সবাই অ্যালার্ট রয়েছে।’
এর আগে গতকাল সোমবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল সোমবার এক বিবৃতির মাধ্যমে মঙ্গল ও বুধবার হরতালের ডাক দেয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।