‘এখন সবই আল্লাহ আর সরকারের হাতে’
আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের দণ্ড কার্যকর করা ঠিক হবে না বলে মনে করেন তাঁর প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই কাদের মোল্লার দণ্ড কার্যকর হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব বলেন, ‘এদের পক্ষে সবই সম্ভব।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমরা রিভিউ শুনানিতে সাক্ষীদের ভুলত্রুটিগুলো উপস্থাপন করেছি। আদালত এগুলো বিবেচনায় না নিয়েই রিভিউ আবেদনটি খারিজ করে দেন।’
কামারুজ্জামানের পক্ষে আর কিছু করার আছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী বলেন, ‘আমাদের হাতে আর কিছুই করার নেই। এখন সবই আল্লাহ আর সরকারের হাতে।’
গতকাল সোমবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।