টেকনাফে ৫ চীনা মুসলিমসহ আটক ৭

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পাঁচ চীনা মুসলিমসহ সাতজনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গত রোববার বিকেলে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে ওই সাতজনকে আটক করা হয়। পরের দিন গতকাল সোমবার বিকেলে আটক ব্যক্তিদের টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়।
আটক চীনা নাগরিকরা হচ্ছেন—বে ইয়ান (৪০), মা ঝিয়া মিন (৪২), মা ইয়ো থিয়ান (৪৫), শি লি (৩৮) ও ইয়া মিন হো (৩০)। অপর দুই বাংলাদেশি হচ্ছেন টেকনাফের গোদারবিল এলাকার আনাস বিন মালিক মাদ্রাসার পরিচালক মৌলভি মো. শফিউল্লাহ ও চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কক্সবাজারে রোমালিয়ারছড়া এলাকার জামিল তাহের।
বিজিবির ভাষ্য, আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, এক হাজার ৯০০ ও দুই হাজার ৬০০ চীনা মুদ্রা এবং ১৬টি ক্রেডিট কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু জার আল জাহিদ জানান, লেদা রোহিঙ্গা বস্তি এলাকায় বিদেশি নাগরিকদের টাকা প্রদানের খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা সাতজনকে আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের টেকনাফ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
আবু জার আল জাহিদ জানান, চীনা নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২ জুলাই তাঁরা বাংলাদেশি নাগরিক মৌলভি মো. শফিউল্লাহসহ বাংলাদেশে আসেন। পরে চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত চীনা ছাত্র ইয়ামিন হুর সঙ্গে যোগাযোগ হয়। এরপর তাঁরা টেকনাফে আসেন।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের গোদারবিল এলাকার আনাস বিন মালিক মাদ্রাসার পরিচালক মো. শফিউল্লাহর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি কয়েক দিন আগে মাদ্রাসার জন্য ফান্ড সংগ্রহে চীনে যান। সেখানে চীনা নাগরিকদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। চীনা নাগরিকরা জানান, তাঁরাও কয়েক দিনের মধ্যে বাংলাদেশে ধর্মীয় কাজে অর্থ সাহায্যের জন্য গমন করবেন। পরে গত শনিবার তাঁরা চার চীনা মুসলিম নারী-পুরুষসহ বাংলাদেশে আসেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল টেকনাফ আনাস বিন মালিক মাদ্রাসা পরিদর্শন করা। এ উদ্দেশ্যে রোববার তাঁরা টেকনাফের উদ্দেশে রওনা হন।
শফিউল্লাহ আরো জানান, তাঁদের সঙ্গে থাকা দুই চীনা নারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে অর্থ সাহায্য দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। রোববার বিকেলে টেকনাফে যাওয়ার পথে লেদা রোহিঙ্গা বস্তিসংলগ্ন এলাকায় দুই নারী গাড়ি থেকে নেমে রোহিঙ্গাদের মধ্যে নগদ টাকা বিতরণ করেন। এ সময় শত শত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ তাদের ঘিরে ফেলে। তাদের কাছে টাকা-পয়সা লুটপাট করে নেয়।
এ বিষয়ে বিজিবি অধিনায়ক জানান, দুই নারী বাংলাদেশে আসার পর আট হাজার ডলার করে ১৬ হাজার টাকার ডলার ভেঙে টাকা করে নেন।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ জানান, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।