ব্যানার পোস্টারেও আচরণবিধি লঙ্ঘন
আর মাত্র ১০ দিন পরই অনুষ্ঠিত হবে দেশের তিন সিটি করপোরেশনে নির্বাচন। এ উপলক্ষে প্রচারণা চলছে জোরেশোরে। তবে এই প্রচারণা চালানোর সময় প্রায় সব স্থানেই আচরণবিধি আমলে না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কয়েকটি নির্বাচনী এলাকা ঘুরেও এ অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
ঢাকা দক্ষিণের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সাঈদ খোকনের সাথে একই ব্যানারে বিভিন্ন ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের ছবি ও প্রতীক ব্যবহার করা হয়েছে, যা স্পষ্টতই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রার্থী নিজ ছবি ও প্রতীক ব্যতীত কোনো রাজনৈতিক দলের নাম বা প্রতীক বা কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম বা ছবি ছাপাতে কিংবা ব্যবহার করতে পারবে না।’
অথচ ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী এ কে এম মমিনুল হক তাঁর ব্যানারে নিজের ছবি ও প্রতীক ঠেলাগাড়ির সঙ্গে সাঈদ খোকনের ছবি ও প্রতীক ব্যবহার করেছেন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ওসমান গনি যাঁর নির্বাচনী প্রতীক লাটিম, তিনিও তাঁর পোস্টারে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী সাঈদ খোকনের ছবি ব্যবহার করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ আজ বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যদি এ রকম হয়ে থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আমি এখনই ওই এলাকায় একজন অফিসারকে পাঠাব যেন তিনি সরেজমিন দেখে ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আচরণবিধিতে পোস্টারের সর্বোচ্চ মাপ দেওয়া আছে ২৩ '' X ১৮ ''। অথচ দক্ষিণের বিভিন্ন স্থানে মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের বড় বড় ব্যানারও দেখা গেছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী হাজি মো. সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলনের দৈনিক বাংলা মোড়, জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সামনে কদম ফোয়ারার সামনে, পান্থপথসহ বিভিন্ন জায়গায় একের অধিক ব্যানার দেখা গেছে।
তবে সিটি ও সংসদ নির্বাচনে ব্যানার ব্যবহার করার অনুমোদন রয়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘তবে ব্যানারের যেহেতু কোথাও লাগানো হয় না ঝুলিয়ে দেওয়া হয় আর ব্যানারের ব্যাপারে আচরণবিধিতে স্পষ্ট কিছু লেখা নেই তাই এ বিষয়টি আমরা ওপেন রেখেছি। সিটি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যানারকে আমরা অ্যালাও করি।’
তবে সিটি করপোরেশন নির্বাচন আচরণ বিধিমালায় বলা আছে, ‘পোস্টার সাদা-কালো হতে হবে এবং এর আয়তন ২৩ ইঞ্চি × ১৮ ইঞ্চির অধিক হতে পারবে না।’
এর আগে দক্ষিণের বিভিন্ন পদপ্রার্থীর সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ সকল প্রার্থীর নির্বাচনী আচরণবিধি ভালোভাবে পড়ার পরামর্শ দিলেও তা আমলে নেননি প্রার্থীরা। সেদিন এক নারী কাউন্সিলর প্রশ্ন করেছিলেন- ‘ঘরের ভেতরে স্টিকার লাগানো যাবে না কি?’ জবাবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয় যে স্টিকার শুধু লিফলেটের মতো বিলি করা যাবে কিন্তু কোথাও লাগানো যাবে না। নির্বাচন কমিশনের এমন বক্তব্যের পরও কথা মানছেন না বেশির ভাগ প্রার্থী বা প্রার্থীর সমর্থকরা। তাঁরা বেশির ভাগই ভোটারের সাথে সাক্ষাতের সময় লিফলেট ভোটারদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন এবং স্টিকার ঘরের ভেতরে নয় বরং ঘরের বাইরে দেয়ালে বা দরজার সামনে লাগিয়ে দিচ্ছেন।