নির্বাচন থেকে সরাতে গুলি, হামলা: খালেদা জিয়া
সিটি করপোরেশন নির্বাচন থেকে সরানোর জন্যই সরকার-সমর্থকরা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গাড়িবহরে হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীতে দল সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে বের হয়ে এ অভিযোগ করেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী। একদিন বিরতি দিয়ে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে খালেদা জিয়া তাঁর গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে ষষ্ঠ দিনের মতো গণসংযোগে বের হন। তিনি বারিধারা ও কুড়িল হয়ে বসুন্ধরা এলাকায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ চালান।
এ সময় খালেদা জিয়া বলেন, ‘সরকার জনবিচ্ছিন্ন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাদের জয়ের সম্ভাবনা নেই। তাই নির্বাচন থেকে বিএনপিকে সরাতে ও আমার প্রাণনাশের জন্য বিভিন্ন স্থানে গাড়িবহরে গুলি ও হামলা করা হয়েছে।’
ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাসের কথা উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাকে মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। সে নিজে ক্যাম্পেইন করতে পারে না। তার পক্ষে তার কর্মীরা ও তার স্ত্রী ক্যাম্পেইন করছে। ইনশাল্লাহ মির্জা আব্বাস অত্যন্ত জনপ্রিয়, সারা বাংলাদেশের মানুষ তাকে চেনে এবং সবাই মির্জা আব্বাসকে ভোট দেবে। আর চট্টগ্রামে রয়েছে আমাদের মেয়র প্রার্থী মনজুর আলম। চট্টগ্রামের জনগণ এরই মধ্যে তাঁকে কমলালেবু মার্কায় ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
‘সেনারা বিদেশে নির্বাচনে নিরাপত্তা দিলে দেশে কেন দেবে না’
‘প্রিয় ভাইয়েরা, এখানে পথচারী ভাইয়েরা তারা দাবি করেছে, তারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার জন্য। সেনাবাহিনী মোতায়েন করলে আমরা বিশ্বাস করি, জনগণ নির্ভয়ে-নিদ্বিধায় ভোটকেন্দ্রে যাবে, ভোট দিতে পারবে। যে সেনাবাহিনী বিদেশে যেয়ে বিদেশিদের জন্য নির্বাচন করে, দেশের সেনাবাহিনী হয়ে কেন তারা নিজের দেশের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, জনগণের নিরাপত্তা দেবে না? দেশের জনগণের দাবি, সেনাবাহিনী মোতায়েন করার জন্য,’ বলেন খালেদা জিয়া।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে ২০-দলীয় জোটের নেত্রী বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন সরকারের একটা আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। ক্যান্টনমেন্টে বসে থেকে কোনোদিন সেনাবাহিনী নিরাপত্তা দিতে পারে না। এইভাবে তারা পিলখানার ঘটনায়ও সেনাবাহিনীকে ক্যান্টনমেন্টে বসিয়ে রেখে পিলখানায় ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করেছে। সেনাবাহিনীকে আসতে দেয় নাই।’
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বর্তমান সরকার হলো খুনি, সন্ত্রাসী এবং তারা ষড়যন্ত্রকারী। তাই আমরা বলতে চাই প্রিয় ভাই ও বোনেরা, নির্ভয়ে-নিদ্বিধায় নিজেরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আপনারা ভোট দিতে যাবেন। আর ভোটকেন্দ্রে কেউ যদি অন্য কিছু করে তার জবাব ঐক্যবদ্ধভাবে আপনারা দেবেন।’
খালেদা জিয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মির্জা আব্বাসকে মগ মার্কায় এবং উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাবিথ আউয়ালকে বাস মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন স্থানে পাঁচদিন টানা প্রচার চালান খালেদা জিয়া। এর মধ্যে পরপর তিনদিন তাঁর গাড়িবহরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়, গাড়ি ভাঙচুর করে। সর্বশেষ গত বুধবার রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িতেই হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের গণমাধ্যম শাখা জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার ভাঙচুর করা গাড়ি মেরামতের জন্য পাঠানো হয়। এ কারণে খালেদা জিয়া নির্বাচনী প্রচারে বের হতে পারেননি। আজ গাড়ির মেরামত শেষ হওয়ায় তিনি প্রচারে বেরিয়েছেন।
আগামী ২৮ এপ্রিল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে।