সন্ধান মেলেনি বরগুনার ১১ ট্রলারসহ দুই শতাধিক জেলের
গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল বঙ্গোপসাগরে বরগুনা জেলার ১১টি মাছ ধরার ট্রলারসহ দুই শতাধিক নিখোঁজ জেলের এখন পর্যন্ত কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
আজ বৃহস্পতিবার জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, কয়েক দিন ধরে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি সামুদ্রিক ঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ায় এর কবলে পড়ে জেলার ১১টি ট্রলার ও এসব ট্রলারে থাকা দুই শতাধিক জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলার সমুদ্রসীমায় বেশ কিছু জেলেদের লাশ ভেসে ওঠার খবর তাঁরা শুনেছেন। সেসব লাশের মধ্যে বরগুনা জেলার জেলেদের কেউ আছে কি না তা জানতে কোস্ট গার্ড ও র্যাবের সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে কোস্টগার্ডের পাথরঘাটা স্টেশনের কনটিনজেন্ট কমান্ডার মোকাররম হোসেন জানান, তিনি বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে উদ্ধার অভিযানে রয়েছেন। তবে সাগর এখনো উত্তাল থাকায় উদ্ধার অভিযান ব্যহত হচ্ছে।
কোস্টগার্ড পাথরঘাটা স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট সৈয়দ আ. রউফ জানান, যেহেতু বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার সময় জেলেদের কোনো রকম এন্ট্রি বা তালিকা কোথাও লেখা থাকে না তাই এ মুহূর্তে ঠিক কতটি ট্রলার বা কতজন জেলে নিখোঁজ রয়েছে সে তথ্য তাঁদের কাছে নেই। তবে ট্রলার মালিক সমিতি সূত্রে তাঁরা জেনেছেন যে, কিছু ট্রলার এবং জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে। তিনি কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ইতিমধ্যে তাঁরা জেনেছেন অনেক ট্রলার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বরগুনার প্রধান দুটি নদী বিষখালী ও পায়রায় বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে জেলার বেশির ভাগ নিম্নাঞ্চল। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে বরগুনা সদর, আমতলী, তালতলী ও পাথরঘাটা উপজেলার ২০টি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি এবং কয়েক হাজার একর ফসলি জমি ও মাছের ঘের। জোয়ারের সময় তলিয়ে যায় ফেরির গ্যাংওয়ে। ফলে ব্যাহত হয় বরগুনা-আমতলী-ঢাকা এবং বরগুনা- খুলনা রুটের দুটি ফেরি পারাপার। এতে ভোগান্তিতে পড়ে শত শত যাত্রী।
কলাপাড়া আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি আজ সকালে উপকূলে আঘাত হেনে মিলিয়ে যায়। এ সময় সাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে পড়ে। নিম্নচাপটির কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার।