যেভাবে ধরা হলো বখাটে ওবায়দুলকে
রাজধানীতে স্কুলছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার সন্দেহভাজন হত্যাকারী ওবায়দুল খানকে ধরতে নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় গতকাল মঙ্গলবার রাতভর অভিযান চালায় পুলিশ। এর পর আজ বুধবার সকালে ধরা হয় তাঁকে।
এ বিষয়ে ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিউর রহমান জানান, ভগ্নিপতির ছোট ভাই ও বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার শাখার অফিস সহকারী খুশবুর খোঁজে গতকাল বিকেলে ডোমারে যান ওবায়দুল। ওই সময় ডোমার ব্র্যাক কার্যালয়ে খুশবুকে পাননি তিনি। পরে তিনি খুশবুর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন।
কথোপকথনের পর ওবায়দুলকে ধরতে কৌশলের আশ্রয় নেন খুশবু। তিনি ব্র্যাকের ডোমার শাখার অফিস সহকারী শাহাদাতকে ফোনে বিষয়টি জানান।
খুশবু শাহাদাতকে বলেন, তিনি যেন ওবায়দুলকে চা পান করান এবং সঙ্গ দেন। এরপর খুশবু বীরগঞ্জ থানায় ফোন করে ওবায়দুলের অব্স্থানের বিষয়ে জানান। পরে বীরগঞ্জ থানা পুলিশ বিষয়টি ডোমার থানায় জানায়।
খবর পেয়ে ঢাকার রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেনসহ একদল পুলিশ নিয়ে রাত ৮টার দিকে ডোমার ব্র্যাক কার্যালয়ে হানা দেন ডোমার থানার ওসি রাজিউর। ঘটনাস্থলে গিয়ে ওবায়দুলকে পায়নি পুলিশ। ওই সময় পুলিশ শাহাদাত ও খুশবুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর ওবায়দুলকে ধরতে রাতভর চলে অভিযান। কিন্তু রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকার রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান আজ দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সকালে নীলফামারীর ডোমারের সোনা বাজার এলাকার রফিকুল ইসলামের হোটেলে বসে নাশতা করছিলেন ওবায়দুল খান। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ওবায়দুলকে নাশতা করতে দেখেন ডোমারের হরিণচরা গ্রামের দুলাল হোসেন নামের ব্যক্তি। তিনি সংবাদমাধ্যম ও ফেসবুকে প্রচারিত বিভিন্ন ছবির সঙ্গে নাশতারত যুবকের মিল পান। এর পর তিনি স্থানীয়দের সহায়তায় থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত গিয়ে ওবায়দুলকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ আগস্ট রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের সামনের ফুটওভার ব্রিজের কাছে রিশাকে ছুরিকাঘাত করেন ওবায়দুল। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় রিশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ আগস্ট, রোববার রিশার মৃত্যু হয়।
রিশাকে ছুরিকাঘাতের পরদিন তার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। রিশার মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় পরিণত হয়।