কুমিল্লায় বিস্ফোরণে দগ্ধ ছাত্রীর মৃত্যু

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) সংলগ্ন একটি ছাত্রীনিবাসে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে ১২ দিন পর শিক্ষার্থী ফাহমিদা হাসান নিশা মারা গেছেন।
গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১টার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থার তাঁর মৃত্যু হয়। নিশার মামা তরিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে সালমানপুর এলাকায় বিদুৎ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম মৃধার মালিকানাধীন প্রশান্তি ছাত্রীনিবাসের পাঁচতলা ভবনের নিচতলাতেই থাকতেন নিশা। তিনি অর্থনীতি বিভাগের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবু হাসানের মেয়ে। গত মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৬টার দিকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হন তিনি। এতে তাঁর শরীরের ৫৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি গত মঙ্গলবার জানান, ওই দিন সকালে আকস্মিক বিকট বিস্ফোরণে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। পরে বোঝা যায়, প্রশান্তি ছাত্রীনিবাসে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিশার শরীর ঝলসে যায়। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই ওই ছাত্রীনিবাস পরিদর্শন করেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন। তিনি জানিয়েছিলেন, বিস্ফোরণটি কিসের, সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত নন। তবে নিশা তরলজাতীয় বিস্ফোরক তৈরির চেষ্টা করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণে ওই ভবনের নিচতলার জানালার গ্রিল উড়ে যায় ও কাচ ভেঙে যায়। তার কক্ষে বিস্ফোরণের পর পাশের কক্ষেও বিস্ফোরণ ঘটে। ঢাকা থেকে তদন্তদল গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন যে বিস্ফোরণটি কিসের।
গত ২৪ আগস্ট কুমিল্লার কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক শহিদুল বাশার বাদী হয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্ত্রাস দমন আইনে জেলা সদর দক্ষিণ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় নিশাকে প্রধান আসামি ও দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়। নিশা ছাড়া বাকি দুজন হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের অষ্টম ব্যাচের ছাত্রী নূর নাহার ও হিসাববিজ্ঞান (এআইএস) বিভাগের অষ্টম ব্যাচের ছাত্রী মর্জিনা আক্তার। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ থানার উপপরিদর্শক খাদেমুল বাহার মামলাটির তদন্ত করছেন বলে জানা যায়।
পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন আজ বলেন, ‘মামলাটি উচ্চতর তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ প্রেরণ করা হবে।’
বিস্ফোরণটি কোন কারণে ও কী দাহ্য পদার্থের কারণে হয়েছিল এমন প্রশ্নে পুলিশের আবিদ হোসেন জানান, আলামতগুলো পরীক্ষাধীন আছে। পরীক্ষার শেষেই বলা যাবে, এটা কী কারণে ও কোন দাহ্য পদার্থের কারণে ঘটেছে।