অচলাবস্থা, সহিংসতা বাংলাদেশকে অভ্যুত্থানের পথে নিতে পারে
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশ একটি নৈরাজ্যময় পরিস্থিতিতে আছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত। সর্বশেষ ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচন সহিংস বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগের, পাশাপাশি ইসলামী জঙ্গিবাদের উত্থানেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ বিষয়ে কংগ্রেসের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সাব-কমিটির শুনানিতে এসব কথা বলা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিলের রেবার্ন ভবনে স্থানীয় সময় বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
urgentPhoto
বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্যই এই শুনানির আয়োজন করা হয়। এ সাব-কমিটির চেয়ারম্যান রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ম্যাট সলমন।
কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান ম্যাট সলমন বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে নির্দোষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আন্তর্জাতিক ইসলামপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী যখন বিভিন্ন দেশে তাদের যোদ্ধা নিয়োগ দিচ্ছে এবং একই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগীর খুঁজছে, ঠিক এ সময়ে জনবসতিপূর্ণ দেশটি সম্পর্কে আমাদের সম্যক জানা প্রয়োজন। এ শুনানির মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়ে আমরা ভালোভাবে জানতে পারব। একই সঙ্গে বাংলাদেশে গণতন্ত্র স্থাপনে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে পরামর্শ দেবে তা জানা যাবে।’
শুনানিতে পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বাংলাদেশ সম্পর্কে বলেন। এর মধ্যে ছিলেন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ, হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের এশিয়ান স্টাডিজ সেন্টারের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো লিসা কার্টিজ, হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশনের পরিচালক চে কানসারা, বাংলাদেশে ব্যবসা করা মার্কিন নাগরিক ফ্লেচলি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের সিনিয়র ফেলো এলিসা আয়ার্স।
শুনানিতে লিসা কার্টিজ বাংলাদেশ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার পর চারটি পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং রাজপথে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা বাংলাদেশকে আবার সামরিক অভ্যুত্থানের পথে নিয়ে যেতে পারে, ২০০৭ সালের মতো করে।’
সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে সংলাপে বসানোর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে পরামর্শ দিয়েছেন লিসা। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত বাংলাদেশ বিষয়ে নিরপেক্ষ অবস্থান নেয় এমন দেশের সাথে কাজ করা। যেমন- যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান।
লিসা বলেন, ‘ইসলামী চরমপন্থীরা দুজন সাংবাদিককে হত্যা করেছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ ইসলামী জঙ্গিরা নিতে পারে।’ তিনি সুশীলসমাজের একটি সংলাপের আয়োজনের কথাও বলেছেন, যাতে তরুণদের যুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন।
শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।