ভিসা পেলেই শিলং যাবেন হাসিনা আহমেদ
ভিসা পাওয়ামাত্রই স্বামীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের উদ্দেশে রওনা দেবেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ ও তাঁর দুই সন্তান। আজ বুধবার সকালে গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
হাসিনা আহমেদ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের লোকজন সকাল থেকে বসা আছে এমবাসিতে। উনারা ভিসা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে ফোনে জানাবেন। ভিসা হয়ে গেলেই আমরা ইনশাআল্লাহ রওনা হবো। সরকারের সহযোগিতা তো সব সময়ই কামনা করে আসছি। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া তো কোনো কিছুই সম্ভব না।’
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়ে হাসিনা আহমেদ জানান, তিনিসহ তাঁদের দুই সন্তান, এক বোন ও ভগ্নিপতির জন্য ভিসার আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্য ভারতীয় ভিসা পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান এই বিএনপির নেতার স্ত্রী।
এর আগে গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা আহমেদ তাঁর স্বামীর বেঁচে থাকার কথা ও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা জানিয়েছিলেন। সালাহ উদ্দিন আহমেদ শিলংয়ের একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।
গতকাল মেঘালয় থেকে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে পাওয়ার কথা জানায়। সেখানে জানানো হয়, শিলংয়ের রাস্তায় ইতস্তত ঘোরাঘুরি করার সময় সন্দেহজনক হিসেবে তাঁকে আটক করে পুলিশ। সেখান থেকে চিকিৎসার জন্য মিমহ্যানস হাসপাতাল ও পরে শিলং সিভিল হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। এ ছাড়া পাসপোর্ট ছাড়া ভারতে প্রবেশ করায় তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ আইনে মামলাও করেছে মেঘালয় পুলিশ।
এর আগে গত ১৯ মার্চ গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের দুর্গম চরাঞ্চলে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান পাওয়ার গুজব উঠেছিল। পরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কারো সন্ধান পায়নি।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ ছিলেন’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ১০ মার্চ—এমন অভিযোগ করে থানা পুলিশের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সালাহ উদ্দিনের পরিবার।
১২ মার্চ হাসিনা আহমেদের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ২০ এপ্রিল হাইকোর্ট আগামী ছয় মাস সালাহ উদ্দিন আহমদের খোঁজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন।