দুই মাস আগে আমাকে অপহরণ করা হয়েছিল, বলেছেন সালাহ উদ্দিন
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ের হাসপাতালে থাকা ‘নিখোঁজ’ সালাহ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দুই মাস আগে ঢাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়।
urgentPhoto
শিলংয়ের সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ এইচ খারখারান সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, ‘তিনি (সালাহ উদ্দিন) কীভাবে পাসপোর্ট ছাড়া ভারতে প্রবেশ করলেন, আমরা এখনো তা খতিয়ে দেখছি। তিনি (সালাহ উদ্দিন) দাবি করেছেন, তিনি কিছুই জানেন না। তবে বলেছেন, দুই মাস আগে ঢাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল।’
হাসপাতাল থেকে সালাহ উদ্দিন তাঁর স্ত্রী সাথে ফোনে কথা বলেছেন বলে এনডিটিভি জানায়।
এর আগে আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ জানান, মেঘালয়ের মিমহ্যানস হাসপাতাল থেকে তাঁর স্বামী তাঁকে ফোন করেছিলেন।
এনটিডিটিভি জানায়, গতকাল সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকায় ইতস্তত ঘুরছিলেন সালাহ উদ্দিন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দিলে স্থানীয় পুলিশ গিয়ে আটক করে তাঁকে। পরে তাঁকে শিল সিভিল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে মিমহ্যানস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান আবার তাঁকে সিভিল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আজ মঙ্গলবার শিলংয়ের দ্য নর্থ-ইস্ট টুডে পত্রিকার অনলাইন সংস্করণেও সালাহ উদ্দিনকে আটক করার খবর প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে হাসপাতালে পুলিশের সঙ্গে দাঁড়ানো অবস্থায় সালাহ উদ্দিন আহমেদের একটি ছবিও দেখানো হয়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, সাদা পোশাক পরিহিত সালাহ উদ্দিনের গায়ে জড়ানো রয়েছে একটি খয়েরি-সাদা চেক চাদর। তাঁর হাত ধরে রেখেছেন একজন পুলিশ সদস্য। পেছনে দেখা যায় হাসপাতালের একজন নার্সকে।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ ছিলেন’ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।
তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁর স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ১০ মার্চ— এমন অভিযোগ করে থানা পুলিশের পাশাপাশি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন সালাহ উদ্দিনের পরিবার।
১২ মার্চ হাসিনা আহমেদের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ২০ এপ্রিল হাইকোর্ট আগামী ছয় মাস সালাহ উদ্দিন আহমদের খোঁজ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেন।