কাজের কথা বলে কিডনি নেওয়ার চেষ্টা, বাবা-ছেলেকে গণপিটুনি

কাজ দেওয়ার কথা বলে মেহেরপুরের গাংনী পৌরসভার মানসিক প্রতিবন্ধী দুই ব্যক্তির কিডনি নেওয়ার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক বাবা ও তাঁর ছেলেকে পিটুনি দিয়েছে স্থানীয় লোকজন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
গণপিটুনির শিকার দুজন হলেন গাংনী পৌরসভার গাড়াডোব হঠাৎপাড়ার সিরাজুল ইসলাম ভেকু (৫৮) ও তাঁর ছেলে হজরত আলী (৩৬)।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হজরত আলী ও তাঁর বাবা সিরাজুল মিলে গাংনী শহরের বাজারপাড়ার গোলাম হোসেন ও শিশিরপাড়ার আতিয়ার রহমানকে প্রলোভন দেখান তাঁদের কাছে ছোট একটি কাজ আছে। কাজটি করলে দেড় হাজার টাকা, এক বস্তা চাল ও একটি করে লুঙ্গি পাওয়া যাবে। এই বলে গতকাল সকালে তাঁদের চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়ায় নিয়ে যান। সেখান থেকে আলমডাঙ্গা ট্রেন স্টেশন থেকে গতকাল বিকেলে কৌশলে ট্রেনে করে তাঁদের রাজশাহী মহানগরে নেওয়া হয়। পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে আজ সকালে মহানগরের বর্ণালির মোড় এলাকায় ক্লিনিক সদৃশ একটি বাড়ি থেকে তাঁদের উদ্ধার করে এবং বাবা ও ছেলেকে গাংনীতে নিয়ে এসে পিটুনি দেয়।
গোলাম হোসেনের বড় ভাই শ্যামলী পরিবহনের বাসচালক আবদুল মালেক জানান, গোলাম হোসেন ও আতিয়ার রহমান হালকা মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁদের ফুঁসলিয়ে কাজ দেওয়ার কথা বলে প্রথমে আলমডাঙ্গায় নেওয়া হয়। এরপর রাজশাহী নেওয়া হয়। তিনি গতকল রাতে রাজশাহীতে পৌঁছান। এরপর অন্যান্য পরিবহন শ্রমিকদের সহায়তায় আজ সকালে জানতে পারেন বর্ণালি মোড়ের একটি বাসায় তাঁর ভাই রয়েছেন। তিনি লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়ে দেখতে পান, ভেতরে একটি ক্লিনিকের মতো আসবাবপত্র ও অস্ত্রোপচার কক্ষ। অথচ বাইরে কোনো সাইনবোর্ড বা চিহ্ন নেই। কেউ বুঝতেও পারবে না এখানে একটি ক্লিনিক আছে। তিনি সেখান থেকে তাঁর ভাই গোলাম হোসেন, আতিয়ার রহমান এবং বাবা-ছেলেকে নিয়ে বিকেলে গাংনী চলে আসেন।
বিকেল ৪টার দিকে গাংনীতে বাস থেকে নামার পর পরই লোকজন সিরাজুল ও তাঁর ছেলেকে উত্তম-মধ্যম দেওয়া শুরু করে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশ সদস্যরা।
আলমডাঙ্গায় কাজ দেওয়ার কথা বলে দুজনকে রাজশাহীর ক্লিনিকে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম ভেকু বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তাঁর ছেলে হজরত আলী সব জানে।
হজরত আলী মারধরে আহত হওয়ায় কথা বলতে পারেননি।
এ ব্যাপারে গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, দুজনকে কিডনি বিক্রির জন্য নেওয়া হয়েছিল না অন্যকিছু তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রকৃত ঘটনা বের করার চেষ্টা চলছে।