পুলিশের হেফাজতে একজনের মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ
পাবনায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে গত বৃহস্পতিবার রেজাউল করিম (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। তবে পুলিশের দাবি, হার্ট অ্যাটাকে রেজাউলের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত রেজাউল করিম সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের খয়েরসুতি গ্রামের মৃত আহম্মদ আলীর ছেলে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুলের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল খয়েরসুতি গ্রামের বাড়ি থেকে ৬০ পুরিয়া গাঁজাসহ রেজাউলকে আটক করে। আটকের কিছুক্ষণের মধ্যে আতঙ্কে রেজাউলের হার্ট অ্যাটাক হয়। তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দাবি করেন, রেজাউলকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। রেজাউল মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন।
রেজাউলের বড় ভাই আজমল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সাদা পোশাকে একদল পুলিশ বাড়ি থেকে রেজাউলকে আটক করেই চেইন দিয়ে পেটাতে থাকে। এ সময় রেজাউল মাটিতে পড়ে যান। তাঁকে গাড়িতে তুলে ডিবি পুলিশ পাবনার দিকে রওনা হয়। বেদম মারপিটের ফলেই রেজাউলের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী খয়েরসুতি গ্রামের বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রেজাউলকে আটকের পরই পুলিশ নির্যাতন করে। পুলিশের মারপিটেই রেজাউল মারা গেছে।
এদিকে পুলিশের দেওয়া তথ্যে গরমিল পাওয়া গেছে। পুলিশের সিজারলিস্ট অনুযায়ী ১২টা ৫৫ মিনিটে রেজাউলকে আটক দেখানো হয়েছে। অপরদিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের রেজিস্টারে রেজাউলকে ভর্তির সময় লেখা রয়েছে ২টা ১৫ মিনিট।
খয়েরসুতি গ্রামের লোকজন জানান, তাঁদের গ্রাম থেকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। গাড়িতে যেতে ১০ মিনিট সময় লাগার কথা। রেজাউল সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে নিতে দুই ঘণ্টা ১০ মিনিট সময় লাগার কথা নয়।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মাশকুরুল আলম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে পুলিশ রেজাউলকে হাসপাতালে নিয়ে আসে অসুস্থ অবস্থায়। দ্রুত তাঁকে চিকিৎসা দেওয়ার সময় ১০ মিনিটের মধ্যেই তিনি মারা যান।
পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, লাশের ময়নাতদন্ত করার পরই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।