নারীদের সহায়তা দিতে বরগুনা পুলিশের ‘জাগরণী’
নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ এবং নারীর নিরাপত্তায় বরগুনায় জেলা পুলিশের উদ্যোগে গঠন করা হয়েছে ‘জাগরণী’ নামে ভিন্নধর্মী এক নারী সহায়তা কেন্দ্র। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে এ সহায়তা কেন্দ্রের সমন্বয়কারী রয়েছেন একজন নারী উপপরিদর্শক (এসআই)।
আজ শনিবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ব্যতিক্রমী এ সহায়তা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. হাছানুজ্জামান এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জুলফিকার আলী খান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন বরগুনার নারীনেত্রী, আইনজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীসহ জেলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের শতাধিক ব্যক্তি।
জেলা পুলিশের সময় উপযোগী এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিচুর রহমান বলেন, প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিষেধক শ্রেয়। তা ছাড়া আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে বিশেষ করে মামলা চালু হয়ে যাওয়ার পর স্বামী-স্ত্রীর পুনর্মিলনের সম্ভাবনাটা অনেকটাই হ্রাস পায়। আর সংসার ভেঙে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সন্তান-সন্ততিসহ সবাই। তাই যে কোনো বিবাদের শুরুতেই যদি তা থামিয়ে দেওয়া যায় তবে তা ভুক্তভোগী পরিবারের জন্য অনেক বেশি মঙ্গল বয়ে আনে।
বরগুনা জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি নাজমা বেগম বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে ব্যতিক্রমী এ সহায়তা কেন্দ্র নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের পাশাপাশি নারীর নিরাপত্তায় নতুন এক মাত্রার যোগ করবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি বলেন, বরগুনা জেলা পুলিশের মতো সারা দেশের জেলা পুলিশ এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। এতে হ্রাস পাবে নারী নির্যাতন। এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. হাছানুজ্জামান বলেন, যে কোনো বিবাদ প্রাথমিকভাবে মিটিয়ে ফেলা সম্ভব হলে তার ক্ষতির পরিমাণও কম হয়। আদালতেও বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে।
জেলা পুলিশের এ উদ্যোগকে একটি ভিন্নধর্মী ও সময় উপযোগী উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করে এ বিচারক বলেন, উদ্যোগটি সঠিকভাবে পরিচালিত হলে নারী নির্যাতনের হার কমে আসবে। কমবে মামলার জটলাও।
পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, মামলা পরিচালনার সামর্থ্য নেই অথবা মামলায় আগ্রহী নন এমন দরিদ্র, অসহায় ও নির্যাতিত নারীদের দুর্দশা লাঘবে পুলিশিং সেবার মধ্য দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে জেলা পুলিশের উদ্যোগে এ সহায়তা কেন্দ্র গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, স্বামী-স্ত্রীর অসহিষ্ণু আচরণ এবং ছোটখাটো দাম্পত্য সমস্যা, পারিবারিক, সামাজিক, শারীরিক ও মানসিক সমস্যা, ইভটিজিং ও বখাটেদের উৎপাত, স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ-খবর না রাখা ও খোরপোষ না দেওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়েও কাজ করবে জাগরণী নারী সহায়তা কেন্দ্র।