বিধবার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, ‘নির্যাতনে’ মৃত সন্তান প্রসব

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এক বিধবাকে অন্তঃসত্ত্বা বানিয়েছেন প্রতিবেশী এক ব্যক্তি। সেই নারীর ওপর শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে সেই নারী দুটি মৃত সন্তান প্রসব করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সূত্রে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন প্রতিবেশী হবিবর রহমান। এতে ওই বিধবা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে হবিবরকে বিয়ের জন্য চাপ দেন তিনি। এতে হবিবর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ওই নারীর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। এতে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী মৃত সন্তান প্রসব করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রহিম বাদশা জানান, প্রায় সাত বছর আগে ওই নারীর স্বামী মারা যান। গত দুই বছর থেকে প্রতিবেশী হবিবর রহমান তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। একপর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। তখন তিনি হবিবরকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারী বিয়ের দাবি নিয়ে হবিবরের বাড়িতে যান। সে সময় হবিবর, তার ভাই রহমান, হবিবরের স্ত্রী মর্ছিয়া বেগম এবং রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম ওই নারীকে শারীরিক নির্যাতন করে। এতে ঘটনাস্থলে ওই নারী একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতেই কয়েকজন গ্রামবাসী রাস্তায় ওই বিধবা নারীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পায়। পরে স্থানীয় কয়েকজন ওই নারীকে তাঁর বাড়িতে রেখে আসে। রাতেই বাড়িতে আরেকটি মৃত সন্তান প্রসব করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে বিষয়টি জানতে পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রহিম বাদশা গ্রাম পুলিশের সহায়তায় ওই নারীকে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানান তিনি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক শামীম শাহরিয়ার জানান, ওই নারী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। নির্যাতনের সময়ে সন্তান প্রসব করায় তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর। তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানিয়েছেন, খবর পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওই নারীর মৃত সন্তান দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নবাবগঞ্জ থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।