ইউপি চেয়ারম্যান আজাদ হত্যায় আ. লীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবি
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/12/07/photo-1481128666.jpg)
জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ কে আজাদ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী মণ্ডলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।
নিহত চেয়ারম্যান এ কে আজাদের মা সাহারা বেগম আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দুপুরে জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাহারা বেগমের স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পড়েন তাঁর বড় ছেলে আজাদের বড় ভাই আবদুল হাই মুকুল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৩১ মার্চ দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ভাদসা ইউপি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন এ কে আজাদ। গত ৪ জুন রাতে একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত তাঁকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে। মারাত্মক আহতাবস্থায় আটদিন পর ১২ জুন ঢাকার একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই আসামি নিহত হয় এবং প্রধান আসামি মুন্না পারভেজ সম্প্রতি ঢাকায় বিদেশি পিস্তলসহ র্যাবের হাতে ধরা পড়ে। আসামিরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। তাদের জবানবন্দিতে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ভাদসা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী মণ্ডলের নাম এবং আজাদকে হত্যার জন্য আসামিদের দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা উঠে আসে, যা এনটিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়। কিন্তু রহস্যজনকভাবে এখন পর্যন্ত হাতেম আলী মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আজাদের মা সাহারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, গত ৫ জুন ছয়জনকে আসামি করে পুলিশ তড়িঘড়ি তাঁদের শুধু স্বাক্ষর নিয়ে থানায় মামলা করে। পুলিশ ওই মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিল তার মধ্যে পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে সোহেল ও মনির নামের দুজন মারা যায়। বাকি তিন আসামি সাদ্দাম, হাকিম ও সৈকত আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় এবং হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দেয়। আসামিরা জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে এ কে আজাদের নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী হাতেম আলী মণ্ডলের নাম উল্লেখ করে। পরে মূল আসামি মুন্না পারভেজ ঢাকায় র্যাব ১-এর হাতে বিদেশি পিস্তলসহ গ্রেপ্তার হন। তিনিও হত্যার পরিকল্পনাকারী হাতেম আলী মণ্ডলের নাম উল্লেখ করে আজাদকে হত্যার জন্য দুই লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলেন- যা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়।
সাহারা বেগম বলেন, পুলিশ প্রশাসন সব জেনেও এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হাতেম আলী মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেনি। এমনকি আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে হাতেম আলী ভাদসা ইউনিয়ন থেকে সদস্য প্রার্থী হয়েছেন। এতে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি যেমন ক্ষুণ্ণ হয়েছে তেমনি তাঁরা নতুন করে আতঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে হাতেম আলী মণ্ডলকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানিয়ে বলা হয়, আসামিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত না হলে ইউনিয়নবাসীকে সঙ্গে নিয়ে পরবর্তী সময়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে নিহত আজাদের ছোট ভাই ভাদসা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ছরোয়ার হোসেন স্বাধীন, ভাতিজা আবু ওমামা সুরাকা ও ভাতিজি নাঈম তাহশিন শিমু উপস্থিত ছিলেন।