হিলি মুক্ত দিবস পালিত

দিনাজপুরের হিলিতে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে ‘হিলি মুক্ত দিবস’। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয় ওই এলাকা।
এর আগে হিলিতে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিত্রবাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট ৩৪৫ জন নিহত হন। ওই যুদ্ধেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী হিলি ছাড়তে বাধ্য হয়।
দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহণ করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও হাকিমপুর পৌরসভা।
এ উপলক্ষে আজ রোববার সকাল ১১টায় হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় থেকে বের হয় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। হিলি স্থলবন্দরের শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ওই শোভাযাত্রা বাসুদেবপুর বিজিবি ক্যাম্পের পাশে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ‘সম্মুখ সমরে’ গিয়ে শেষ হয়। এ সময় সেখানে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবার, পৌরসভার মেয়র, আওয়ামী লীগ নেতারাসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। এ সময় শাহাদাতবরণকারী শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর দুপুর ১২টায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাংবাদিক জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ছানাউল ইসলাম, পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত, হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক হারুন উর রশিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রতাপ মল্লিক ও যুগ্ম সম্পাদক শাহীনুর রেজা, পৌরসভার সাবেক মেয়র কামাল হোসেন রাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাসসুল আলম মণ্ডল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সম্পাদক জুয়েল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিকুর রহমান মুন্না ও কোষাধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী জানান, রণকৌশলগত কারণে হিলি দখলে নিতে এপ্রিল মাস থেকে আকাশ ও সড়ক পথে থেমে থেমে হামলা চালায় হিলি সীমান্তবাসীর ওপর পাকসেনারা। একপর্যায়ে ৯ ও ১০ ডিসেম্বর মুহাড়াপাড়া গ্রামের পাশে মিত্রবাহিনীর সাথে প্রচণ্ড সম্মুখ যুদ্ধে নিহত হন মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর মোট ৩৪৫ জন সদস্য। আহত হয়েছিলেন প্রায় দুই হাজারের মতো। অবশেষে ১১ ডিসেম্বর মুক্ত হয় হিলি।