শিল্পাচার্য জয়নুলের শিল্পকর্ম আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবে : রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের শিল্পকর্ম আগামী প্রজন্মকে সৃজনশীল কাজে নিরন্তর অনুপ্রেরণা জোগাবে। তিনি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার (২৭ মে) এক বাণীতে একথা বলেন।
আজ রোববার (২৮ মে) শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গ্রামবাংলার নৈসর্গিক সৌন্দর্য, সাধারণ মানুষের সহজ-সরল জীবনযাত্রা, মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ও সংগ্রামই ছিল শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের চিত্রকর্মের মূল উপজীব্য। তাঁর কর্মে প্রতিভাত হয়েছে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নর-নারীর শ্রম ও সংগ্রাম এবং তাদের ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ।’
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘তিনি (শিল্পাচার্য জয়নুল) ইউরোপীয় স্টাইলে চিত্রাঙ্কনের ওপর লেখাপড়া করলেও প্রাচ্য বা পাশ্চাত্যের অঙ্কনধারা তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। অতিমাত্রায় রীতি নির্ভরতার পরিবর্তে তিনি (জয়নুল) বাস্তবতার প্রতি আকৃষ্ট হন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, “১৯৩৮ সালে সর্বভারতীয় চিত্রকলা প্রদর্শনীতে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন তাঁর অঙ্কিত জলরঙের ছবির জন্য স্বর্ণপদক লাভ করেন। বরেণ্য এই শিল্পীর কল্পনার রেখা ও তুলিতে ভাস্বর হয়ে উঠেছে ১৯৪৩ সালের ‘দুর্ভিক্ষের রেখাচিত্র’, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে ‘নবান্ন’, ১৯৭০ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে লাখো উপকূলবাসীর মৃত্যুতে ‘মনপুরা’র মতো হৃদয়স্পর্শী চিত্র।”
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘বরেণ্য এই শিল্পীর কালজয়ী শিল্পকর্ম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বিপুল প্রশংসা কুড়িয়েছে ও স্বীকৃতি লাভ করেছে। অসাধারণ শিল্প-মানসিকতা ও কল্পনাশক্তির জন্য জয়নুল আবেদিন শিল্পাচার্য উপাধিতে ভূষিত হন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের উদ্যোগে ১৯৪৮ সালে ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমানে চারুকলা ইনস্টিটিউট) প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতা এবং শিল্পাচার্য জয়নুলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৭৫ সালে সোনারগাঁওয়ে লোকশিল্প জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। ময়মনসিংহে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা গ্যালারি।’
মো. সাহাবুদ্দিন মনে করেন, ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের শিল্পকর্ম আগামী প্রজন্মকে সৃজনশীল কাজে নিরন্তর অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং শিল্পাঙ্গনে তাঁর অনবদ্য অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।’
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।