পানির নিচে ডেমরার অলিগলি, বন্ধ যান চলাচল
রাজধানীতে ঈদের আগের দিন বুধবার (২৮ জুন) সকাল থেকে শুরু হয়ে টানা চার দিন থেমে থেমে বৃষ্টি এখনো চলছে। এই চার দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর অনেক এলাকা ডুবে গেছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ঈদের ছুটি থাকায় রাজধানী কিছুটা ফাঁকা থাকলেও আজ থেকে মানুষ ফিরতে শুরু করেছে। বাস থেকে নেমেই বাসায় ফিরতে যানবাহন সংকটে পড়তে হচ্ছে।
আজ শনিবার (১ জুলাই) সকালে বৃষ্টির মাত্রা ছিল কম। তবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল। দুপুরের পর আকাশ অন্ধকার করে নামে মুষলধারে বৃষ্টি। টানা বৃষ্টির কারণে তলিয়ে গেছে রাজধানীর অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়কও। তবে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকায় জলাবদ্ধতার কারণে যানজট দেখা দেয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডেমরা এলাকায় গত তিন দিন ধরে পানিতে ডুবে রয়েছে। ডেমরা এলাকার কয়েকটি সড়কে কোমর পরিমাণ, কোথাও কোথাও হাঁটু পরিমাণ পানির কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে তামিরুল মিল্লাত মহিলা মাদ্রাসা থেকে ফার্মের মোড়, রহমতগঞ্জসহ অনেক এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুরান ঢাকার বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড পানির নিচে তলিয়ে গেছে। জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে ধানমণ্ডি ৭ নম্বর, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশে। মগবাজারের ওয়ারলেছ রেলগেট থেকে সোনালীবাগ, মধুবাগ, মীরবাগসহ আশপাশের সড়কে পানি উঠেছে। এছাড়া তেজগাঁও ট্রাক স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কের কয়েকটি স্থানে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
সিএনজি অটোরিকশার চালক রফিক বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে ডেমরা এলাকায় অধিকাংশ রাস্তা পানির নিচে ডুবে গেছে। এছাড়া আজকে বৃষ্টি শুরুর কিছুক্ষণ পরেই ধানমণ্ডি, শুক্রাবাদের কিছু সড়কে পানি জমে যায়। এর মধ্যে গাড়িতে যাত্রী নিয়ে আসার সময় ইঞ্জিন হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। পরে যাত্রী নামিয়ে কিছুদূর গাড়ি ঠেলে নিয়ে আসতে হয়েছে। পরে গাড়ি স্টার্ট নিয়েছে। হাতিরঝিল হয়ে গুলশানের দিকে আসার সময়ও অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা দেখেছি।
অন্যদিকে পুরান ঢাকার বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোডের জলাবদ্ধতার বর্ণনা দিয়ে আরেক উবার চালক খোরশেদ আলম বলেন, একটা ট্রিপ নিয়ে পুরান ঢাকায় গিয়েছিলাম। ফেরার পথে পুরো সড়ক অলিগলিতে জলাবদ্ধতা দেখেছি। কোথাও কোথাও আবার হাঁটু পানি জমেছে।
এদিকে ঈদের টানা পাঁচদিনের সরকারি ছুটি শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন পেশাজীবীরা। তাদের মধ্যে অধিকাংশই চাকরিজীবী। পরিবার নিয়ে ঢাকায় ফেরা কর্মব্যস্ত মানুষগুলোর অনেকেই বৃষ্টিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকামুখী যাত্রীদের অনেককে ভিজেই বিভিন্ন পরিবহণে ওঠানামা করতে দেখা যায়।
শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সিলেট থেকে সায়েদাবাদে পরিবার নিয়ে পৌঁছানো এক যাত্রী বলেন, ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। ভিজতে ভিজতেই বাস থেকে নেমেছি। সিলেট থেকে রওনা দিয়ে কোনোরকম ঝামেলা ছাড়াই ঢাকা পর্যন্ত আসতে পেরেছি। কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো বাস থেকে নামার সময়। বাস থেকে নেমে পুরো ভিজে গেছি। এখন বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে এভাবেই মানিকনগরের বাসায় ফিরছি।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে কেকে ট্রাভেলস পরিবহণের সুপারভাইজার রহমত আলী বলেন, আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া খুব ভালো ছিল। দুপুরের আগে যারা ঢাকায় এসেছেন তারা বেশ ভালোভাবেই বাসায় পৌঁছেছেন। বৃষ্টিও ছিল না। কিন্তু বিকেলে যাত্রীদের অনেকে বাস থেকে নেমেই বৃষ্টির কবলে পড়েছেন।