কুমিল্লায় সরিষা ও তিল চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা
কুমিল্লারর বুড়িচং উপজেলার পাহাড়পুর এলাকার কৃষকরা এক জমিতে বছরে চার ফসল করে লাভবান হচ্ছেন। একসময় এ গ্রামের কৃষকরা মৌসুমে দুবার ধান চাষ করতেন। বাকি সময় জমি খালি পড়ে থাকত। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে সেখানে সরিষা ও তিল চাষ করা হচ্ছে। ধারাবাহিক চার ফসল হচ্ছে সরিষা, তিল, রোপা আউশ ও রোপা আমন।
কৃষি অফিসের সূত্রমতে, উপজেলার পাহাড়পুর এলাকায় ৬০ বিঘা জমিতে বারি সরিষা-১৪ চাষ করা হয়। সরিষা ফসল তোলার পর ২০ বিঘা জমিতে বিনাতিল-২, বারি তিল-৪, হোমনার স্থানীয় তিল চাষ করা হয়েছে। এক জমিতে বছরে চার ফসল করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। মাঠে বিঘাপ্রতি চার থেকে পাঁচ মণ তিল উৎপাদন হয়। এর বাজার মূল্য ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। গড়ে খরচ হয় বিঘাপ্রতি চার হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি লাভ ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা। সরিষা বিঘাপ্রতি চার থেকে পাঁচ মণ উৎপাদন হয়, যার বাজার মূল্য ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকা। গড়ে খরচ হয় বিঘাপ্রতি চার হাজার টাকা। বিঘাপ্রতি লাভ ১২ থেকে ১৬ হাজার। আউশ ধান বিঘাপ্রতি ১৪ মণ করে ফলন হলে আয় ১৫ হাজার টাকা, ব্যয় ১১ হাজার টাকা ধরলে লাভ হতে পারে চার হাজার টাকা।
স্থানীয় কৃষক রমজান হোসেন বলেন, ‘রবি মৌসুমে সরিষা চাষের পর পাহাড়পুর গ্রামের মাঠের জমিগুলো পতিত থাকত। উপজেলা কৃষি কার্যালয় কৃষকদের তিল চাষের পরামর্শ দেয় ও বীজ বিতরণ করে। শুরুতে তিল চাষের অভিজ্ঞতা না থাকায় অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে, সব শঙ্কা কাটিয়ে ২০ বিঘা জমিতে তিল চাষ সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে জমির পরিস্থিতি দেখে বিঘাপ্রতি ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন কৃষকরা।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ বানিন রায় বলেন, ‘বোরো-রোপা আমন শস্য বিন্যাসের স্থলে সরিষা-তিল-রোপা-আউশ শস্য বিন্যাসে বিঘাপ্রতি অতিরিক্ত গড়ে ২৫ হাজার টাকা আয় সম্ভব। পাহাড়পুরের মোট ৮০ বিঘা জমিতে প্রতিবছর অতিরিক্ত ২০ লাখ টাকা অর্থনীতিতে যুক্ত হবে। দেশের তেলের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি গ্রামের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’