জনদাবি মেনে পদত্যাগ করুন, সরকারকে এবি পার্টি
অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকারের দাবিতে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’ আহুত ‘প্রতিবাদী অবস্থান ও বিক্ষোভ’ কর্মসূচিতে দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, জনদাবি মেনে পদত্যাগ করুন। জেদ ও গোয়ার্তুমি করে আবারও একতরফা নির্বাচনের পথে যাবেন না। সে পথে গেলে পাপের বোঝা আরও ভারী করা ছাড়া অন্য কোন লাভ হবে না, যত দেরী করবেন তত ভুল বেশি করবেন।
আজ শুক্রবার (২৮ জুলাই) বেলা ১১টায় বিজয়নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয়-৭১ চত্বরে এবি পার্টির পূর্বঘোষিত এ ‘প্রতিবাদী অবস্থান ও বিক্ষোভ’ অনুষ্ঠিত হয়। দলের সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিএনপি ঘোষিত একদফা আন্দোলনে সমর্থন ও সংহতি জানিয়ে আজ রাজধানীতে বিভিন্ন দল ও জোট ব্যাপক কর্মসূচি পালন করে। এবি পার্টির কর্মসূচি ছিল দিনের শুরুতে সকাল ১১টায়। বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, গত ১৫ বছরে গুম, খুন, দমন-নিপীড়ন, ভোট চুরি ও নজিরবিহীন দুর্নীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার নিজেকে বাংলার মানুষের জাতীয় শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে ফেলেছে। পেশি শক্তি আর দালাল প্রশাসন নির্ভরতা এই সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। তারা যত জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে তত বেশি ফ্যাসিবাদী রূপ ধারণ করছে।
এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সর্বদলীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে ৯০ দিনের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এক ধরনের ‘রাজনৈতিক সমঝোতা’ তৈরি হয়েছিল। দুখঃজনক হলো সুপ্রিম কোর্টের কাঁধে বন্দুক রেখে সেই নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা বাতিল করবার মধ্য দিয়ে সরকার তার নির্বাচনি ম্যান্ডেট ও শপথ ভঙ্গ করেছে। ২০১১ সালের ১০মে আদালত তার সংক্ষিপ্ত রায়ে আরও দুটো নির্বাচন একই পদ্ধতিতে করার মতামত দিলেও লিখিত রায় প্রকাশিত হবার আগেই ৩০ জুন ২০১১ তাড়াহুড়া করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয় সরকার। সংসদীয় কমিটির সর্বসম্মত মতামতও এতে উপেক্ষা করে দেশকে এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয় বর্তমান সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ পনের বছর যাবত এক স্বৈরাচারের যাঁতাকলে পিষ্ট জাতি। সময় এসেছে একটি গণবিপ্লবের মধ্য দিয়ে জাতিকে মুক্ত করতে হবে। এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুর্বৃত্তায়ন শেষ দেশকে পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হবে।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, পার্টির দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, যুব পার্টির আহ্বায়ক এবিএম খালিদ হাসান, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আব্দুল বাসেত মারজান, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, শ্রমিকনেতা শাহ আব্দুর রহমান, এম আমজাদ খান, যুবনেতা শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসাইন, ফিরোজ কবীর, তফাজ্জল হোসেন রমিজ, ছাত্রনেতা মোহাম্মদ প্রিন্স, আশরাফুল আলম নির্ঝর, অ্যাডভোকেট সুলতানা রাজিয়া, মহানগর নেতা শফিউল বাশার, আব্দুল হালিম নান্নু, সেলিম খান, ফেরদৌসী আক্তার অপি, আব্দুর রব জামিল, নজরুল ইসলাম, শিলা আক্তার, জেসমিন আক্তার মুক্তা, আব্দুল কাদের মুন্সি, আবদুল মান্নান প্রমুখ।
প্রতিবাদী অবস্থান থেকে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। প্রতিবাদী অবস্থান ও বিক্ষোভে অবৈধ বেআইনি সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ, গণঅনাস্থা জ্ঞাপন, প্রতিবাদী লংমার্চ সহ লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং সকল ধরনের আন্দোলন সংগ্রামের জন্য দেশবাসীর সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করা হয়।