নিখোঁজ ছয় ছাত্রদলনেতাসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল ডিবি
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিন ও নিখোঁজ ছয় ছাত্রদলের নেতাসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যদিও বিএনপির একজন ও ছাত্রদলের ছয়জন বাদে আর কারও নামপ্রকাশ করেনি সংস্থাটি।
আজ রোববার (২০ আগস্ট) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম ও ডিবি-উত্তর) খোন্দকার নুরুন্নবী তাদের গ্রেপ্তারের তথ্য তুলে ধরেন।
খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘গতকাল রাতে নাইটিঙ্গেল মোড়ে অভিযান চালিয়ে বিএনপিনেতা তানভীর আহমেদ রবিনসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পূর্বের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।’
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন— ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম ওরফে জিসান (৩১), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আর রিয়াদ (২৯), সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ (৩০), সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান ওরফে হাসান (৩২), ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাদত হোসেন (৩১), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর (৩২) ও ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফ বিল্লাহ (৩০)।
গতকাল শনিবার রাতে তানভীর আহমেদ রবিনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে বিএনপি। গতকাল দিনগত রাত ৩টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, ‘রাত ১২টার পরে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে করে নাইটিঙ্গেল মোড়ে গেলে গোয়েন্দা পুলিশ রবিনকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে, তাঁকে ঘিরে ফেলে ডিবি। এরপর থেকে তাঁর হদিস মিলছে না। তাঁর পরিবার থেকেও কিছু বলতে পারছে না। রবিনকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে, এটা অনেকেই দেখেছেন। আমরা বলছি, তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু গোয়েন্দা পুলিশ তা স্বীকার করছে না।’
এর আগে গতকাল রাত পৌনে ১টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ের সামনে পুলিশের উপস্থিতি বেড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে এখানে এসেছি। এখনো সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক সদস্যকে দেখতে পাচ্ছি।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে আমাদের ১৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া সন্ধ্যায় কার্যালয়ে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আটকে ছিলেন।’
আজ সংবাদ সম্মেলনে খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘শনিবার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ছাত্রদলের ছয়জন নেতাকে গ্রেপ্তার করে লালবাগ ডিবি। তাদের কাছ থেকে তিনটি অস্ত্র জব্দ করা হয়। অস্ত্রগুলোর মধ্যে দুটি পাবনা ও একটি টেকনাফ থেকে সংগ্রহ করেন তারা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে সহিংসতা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৬ রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়।’
খোন্দকার নুরুন্নবী বলেন, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কথোপকথনের সূত্রে কাদের কাছ থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করা হয়েছে সেই তথ্য জানা গেছে। অস্ত্র সরবরাহকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে।’