চাঁদপুরে মাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মা ছালেহা খাতুনকে (৮০) মারধর করে হত্যার দায়ে ছেলে আবুল কালাম বাহারকে (৫০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিসনুল হক এই রায় দেন।
হত্যার শিকার মা ছালেহা খাতুন উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ধানুয়া গ্রামের মিজিবাড়ির মৃত আব্দুল খালেক মিজির স্ত্রী।
মামলার বিবরণ ও বাদী মো. রুহুল আমিন মিজির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আসামি বাহার এক সময় প্রবাসে ছিলেন। দেশে ফিরে তিনি অনেক সময় এলোমেলো কথাবার্তা বলতেন। যার কারণে তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। এরপর বিভিন্ন সময়ে তিনি তাঁর মাকে মারধর করে আহত করতেন। ঘটনার দিন ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মায়ের ঘরে প্রবেশ করে অতর্কিত মারধর করেন। ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে ঘরের স্টিলের দরজার আংটা মায়ের চোখে ডুকে যায় এবং তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ঘরের অন্য সদস্যরা চিৎকার দিলে লোকজন এগিয়ে আসে এবং ছালেহা খাতুনকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাপসাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ফরিদগঞ্জ ও চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ মরদেহ সুরতহাল করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে ছালেহা বেগমের মরদেহ হস্তান্তর করেন।
এই ঘটনায় ছালেহা খাতুনের মেয়ের জামাতা মো. রুহুল আমিন মিজি ঘটনার পরের দিন ২৪ জুলাই ফরিদঞ্জ থানায় আবুল কালাম বাহারকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় ফরিদগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী মো. জাকারিয়াকে। তিনি মামলাটি তদন্ত শেষে ওই বছর ১৩ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দেন।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) রণজিত রায় চৌধুরী জানান, মামলাটি চলাকালীন আদালত ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সাক্ষ্য মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে আসামির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামি আবুল কালাম বাহার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আসামিপক্ষে সরকার থেকে নিযুক্ত (এসডিএলআর) আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া।