কারাগারে অধিকারের আদিলুর
মানবাধিকার সংগঠন 'অধিকার'-এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সাজা দেওয়ার পর বিকালের দিকে আদালতপাড়া থেকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঢাকার মতিঝিলে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ নিয়ে তথ্য বিকৃতির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা মামলায় এই আদেশ দেন আদালত।
আজ দুপরে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি উভয়কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনিদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এদিন জামিনে থাকা দুই আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আসামিদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রায়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী রুহুল আমিন ভূইয়াঁ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানান। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শামীমও এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি রায় পর্যালোচনা করে আপিল করবেন বলো জানান।
এর আগে ২৪ আগস্ট রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন আদালত। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালে ৫মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলাম সমাবেশ করে। পরে সমাবেশস্থলে রাত্রিযাপনের ঘোষণা দেন সংগঠনের নেতারা। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে যৌথ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে দাবি করেছিল অধিকার। তবে, সরকারের ভাষ্য সেই রাতের অভিযানে কেউ মারা যায়নি।
শাপলা চত্বরে অভিযানের পর ২০১৩ সালের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন ডিবির তৎকালীন এসআই আশরাফুল ইসলাম। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আদিলুর ও এলানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর বানোয়াট উদ্দেশপ্রণোদিত ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে। পাশাপাশি তারা ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি করে।
ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলাটি বিচারের জন্য অভিযোগ আমলে নেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল। এরপর ২০১৪ সালে দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।