জুয়া ভেবে ঢাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারিতে জড়ালেন দোকানিরা
রাজধানীর ধানমণ্ডি লেক সংলগ্ন রবীন্দ্র সরোবরের খাবারের দোকানি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি-মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মোবাইল গেম খেলা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। শিক্ষার্থীরা দোকানে বসে জুয়া খেলছে মনে করে উঠে যেতে বললে প্রথমে তর্ক ও পরে মারামারি শুরু হয়। এতে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শিক্ষার্থীদের দাবি ও পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঘটনাটি গতকাল শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার। আহত শিক্ষার্থীরা মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন আজ। যদিও তা মতামতের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন অমর একুশে হলের শিক্ষার্থী মারুফ।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন—ঢাবির অমর একুশে হলের ও রোবটিকস অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান আলিফ, ফার্মেসি বিভাগের বায়েজিদ, নাসিফ, ইতিহাস বিভাগের আজিম মাহমুদ তৌহিদ, সিফাতুল ইসলাম, আজহা, মাহিন ও জুনায়েদ। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় চার বন্ধু মিলে ঘুরতে গিয়ে লেকের একটি দোকানে খাবার অর্ডার করে উনো (এক ধরনের কার্ড গেম) খেলছিলেন। এমন সময় এক দোকান কর্মচারী এসে তাস খেলা যাবে না বলে তাদের চলে যেতে বলেন। তখন ওই শিক্ষার্থীরা জানান, এটি তাস খেলা নয়। তারপর তারা সেখান থেকে উঠতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীদের আরও কয়েকজন বন্ধু-বান্ধব সেখানে পৌঁছান। তাদের এক বান্ধবীকে নিয়েও বাজে মন্তব্য করেন দোকানিরা। পরে কথাকাটাকটি রূপ নেয় মারামারিতে।
আহতদের সহপাঠী মারুফ এসব তথ্য জানানোর পাশাপাশি বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা সাত-আটজন গিয়ে তাদের (দোকানি) সঙ্গে কথা বলার সময় পুলিশ এসে তাদের ভুলের জন্য আমাদের কাছে সরি (দুঃখিত) বলতে বলে। কিন্তু, তারা সরি না বলে উল্টো আমাদের ওপর উপর্যুপরি হামলা করে।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘গত রাতে ধানমণ্ডি লেকে মারামারির ঘটনায় আমাদের এখানে ঢাবির আটজন ছাত্রছাত্রী চিকিৎসা নিতে আসছিলেন। এদের মধ্যকার একজনের অবস্থা একটু খারাপ ছিল। আর বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার সময়ই আমরা দুপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছিলাম। পরে আবার হঠাৎ মারামারির ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে কথা হয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা কোনো অভিযোগ দেন, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে মামলার দিকে যাওয়া হবে। এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি।’
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানকে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টার পরও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। দোকানিদের পক্ষ থেকেও কোনো বক্তব্য মেলেনি।