নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা ও অর্থায়ন প্রয়োজন : নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নে অর্থের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তাও প্রয়োজন। আজ রোববার (১ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পূর্ব, এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক পিটারিস উস্তুবাসের নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ ক্লিন এনার্জি থেকে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রায় ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে এবং আরও ১০ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের ৯০ শতাংশই বেসরকারি খাতের পৃষ্ঠপোষকতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
নসরুল হামিদ বলেন, সরকার উপকূলীয় ও অফশোর বায়ু শক্তি, উভয় ক্ষেত্রেই আরও প্রকল্প গ্রহণ করতে ইচ্ছুক। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় বায়ুশক্তির সম্ভাব্যতা যাচাই করছে।
নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘ইউরোপের কয়েকটি দেশ বায়ু প্রকল্পের উন্নয়নে বাংলাদেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাই বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করতে এই বিষয়ে কাজ করতে পারে ইইউ। ট্রান্সমিশন লাইন ও সাব-স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে গুণগত মান ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল হওয়ায় দেশে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হারিয়েছে। এই পরিমাণ বিনিয়োগ এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে আসা উচিত।’ তিনি প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেন, ছাদে সৌরবিদ্যুৎ বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পিটারিস বলেন, ‘ইইউ বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইইউ’র ৭০৬ মিলিয়ন ইউরো থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে পারে, যা কারিগরি সহায়তা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে অনুদান হিসেবে সরবরাহ করা যেতে পারে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্রিনহাউজ গ্যাস হ্রাস, বিদ্যুৎ নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ইইউ ‘এনার্জি কানেক্টিভিটি ইন সাউথ এশিয়া’ নামে একটি প্রকল্পে কাজ করছে।’
এ ছাড়া ইইউ ‘পার্টনারশিপ ফর গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় টেকসই ও নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (স্রেডা) সহায়তা করছে।
আঞ্চলিক বিদ্যুতের বাজার, ইইউ বাজার, গ্রিডের উন্নয়ন, আঞ্চলিক স্থান, নেপাল থেকে পাবলিক সেক্টরের সহযোগিতা, সমন্বিত জ্বালানি এবং পাওয়ার মাস্টার প্ল্যানের বিষয়গুলো আলোচনায় এসেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, দক্ষিণ এশিয়ার সেক্টর হেড অড্রে মেলোট এবং বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান।