শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে প্রধান শিক্ষক শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দুদিন ধরে এমনই একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানোর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সমালোচনা চলছে। আর এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা শহরের ভাদুঘরে বাজার রোডে ফাটাপুকুর রেলগেইট সংলগ্ন প্রফেসী কিন্ডার গার্টেন স্কুল। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু আছেম আল আরিফ মোল্লার বিরুদ্ধে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সবশেষ গতকাল বুধবার সকালে বিদ্যালয়ের সামনে রড সিমেন্টের ঢালাইয়ের তৈরি প্রায় ৪০ কেজি ওজনের একটি বেঞ্চের পাটাতন চার শিশু শিক্ষার্থী দিয়ে বহন করিয়ে নিয়ে যান প্রধান শিক্ষক। এ সময় তাদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক থাকলেও তিনি তা বহনে শিশু শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেননি। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গতকালই ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে চলছে সমালোচনা।
এই বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
তবে এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মোস্তফা সাইফুর বলেন, ‘আমরাও স্কুলে পড়ার সময় স্যারদের কাজ করে দিয়েছি। কিন্তু কখনো ঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজ উনারা করাতেন না। এত বড় প্রায় ৪০ কেজি ওজনের একটি পাটাতন আমাদের প্রাপ্ত বয়স্করা নিয়ে যাওয়া ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। অথচ উনার মতো একজন শিক্ষিত মানুষ কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে বহন করালেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক আবু আছেম আল আরিফ মোল্লার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এই বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হোসেন বলেন, ‘ভিডিওটি আমিও দেখেছি। এই ধরনের কাজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো মোটেও কাম্য নয়। এসব কাজ শ্রমিক দিয়ে করাবেন। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামসুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এ ধরনের কাজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো ঠিক নয়। তবে এই বিদ্যালয়গুলো নিজেরাই পরিচালনা করে আসছে। তাই আমাদের করার কিছু থাকে না। তার পরও আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম শেখ বলেন, এই বিষয়ে ‘ইতোমধ্যে আমি অবগত হয়েছি। অবশ্যই এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’