শিশু ফাতিমা হত্যা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের নয় বছরের শিশু ফাতিমা আক্তার ইতিকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় হাইকোর্টে খালাস পাওয়া দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) এই রায় দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হেলান উদ্দিন মোল্লা ও শিশির মনির। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ঝাটিবুনিয়া গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে ফাতিমা আক্তার ইতি পাশের বুখাইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামে নানাবাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। সে স্থানীয় হাতেমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তো। ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর সকালে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য বিদ্যালয়ের মাঠে যায় ইতি। পরদিন দুপুরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে তার মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহত শিশুটির বাবা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় পুলিশ মেহেদী ও সুমনকে আটক করে। পরে সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল শিশু ইতিকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তার মামাতো ভাই মেহেদী হাসান ওরফে স্বপন ও একই গ্রামের সুমন জমাদ্দারকে মৃত্যুদণ্ড দেন। একইসঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়, যা নিহত শিশুর বাবা-মাকে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আবেদন করে। আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৩০ জুন বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মুবিনের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ দণ্ডপ্রাপ্ত দুজনকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সে রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ আজ এই রায় দেয়।