অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ বিরোধীদলীয় চিপ হুইপের
সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে সমন্বয় করে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই অনুরোধ জানান।
চুন্নু বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডে যে দুঃখজনক ঘটনা ঘটে, সেটি আমরা সংসদে উত্থাপন করি। সরকারের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানি না। কিন্তু আমরা দেখলাম বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট এত তড়িৎ গতিতে….। রাজউক একদিকে যায় একটা হোটেল বন্ধ করে। আবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যাচ্ছে এক জায়গায়, আবার ফায়ার ব্রিগেড যাচ্ছে। একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে কে কোনটা আটকাবে, কোনটা ভাঙবে বা কোনটা ধরবে। তাই আমার কাছে মনে হয় এটা একটা সমন্বয়হীনতার মাধ্যমে চলছে।’
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন হলো যে রাজউক থেকে আগে শনাক্ত করা হয়েছে যে কোন কোন ভবন ঝুঁকিপূর্ণ এবং কোন কোন ভবনে আগুন লাগার সম্ভবনা আছে অথবা যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এগুলো যারা সংশ্লিষ্ট বিভাগ তারা যদি সমন্বয় করে বা কমিটি করে যদি একটা একটা ধরে তাহলে ভালো হয়। কারণ আমরা দেখলাম তিন-চারটি ডিপার্টমেন্ট থেকে তারা তড়িৎ অ্যাকশন নিচ্ছে। যার ফলে কয়দিন পর দেখা যাবে কেউ নাই, একদম নীরব হয়ে যাবে।’
চুন্নু আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরে এক হাজার ১০৬টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। তারমধ্যে আটটি মার্কেট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অতি ঝুঁকিপূর্ণ যেমন- গাউসিয়া, ফুলবাড়িয়ার বরিশাল প্লাজা, টিকাটুলির নিউ রাজধানী সুপার মার্কেট, লালবাগের আলাউদ্দিন মার্কেট, চকবাজারের শহিদুল্লাহ মার্কেট ও শাকিল আনোয়ার টাওয়ার, সদরঘাটের শরীফ মার্কেট, সিদ্দিকবাজারের রোজলিন ভিস্তা। গাউসিয়া মার্কেটে নারীদের আনাগোনা বেশি। এমন এক জায়গায় যদি এখানে কোনো দুর্ঘটনা হয় তাহলে আমার মনে হয় অনেক মানুষ মারা যাবে। যদি সমন্বয় করে গাউসিয়াসহ এই মার্কেটগুলো যদি এখনই মালিক বা যারা ডেভলপার তাদের সঙ্গে আলাপ করে একটা সমন্বয় করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা না হয়, এটিকে যদি সরকারের দৃষ্টিতে নেওয়া না হয় তাহলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটবে।’ তিনি বলেন, ‘সামনে ঈদ, এখন গরম। গাউসিয়ায় মানুষ যাবে, হাজার হাজার নারীরা যাবেন। আমিও গেছি আমার স্ত্রীর সঙ্গে। হাঁটা যায় না, অটোমেটিক চলে যেতে হয় এত ভিড়! সেখানে যদি একটি কাণ্ড ঘটে তাহলে মারাত্মক একটি অবস্থা হয়ে যাবে। আমি একদিন মিরপুর গিয়েছিলাম, সেখানে একটি মার্কেট আছে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট। সেই আশির দশকে হয়েছিল, প্রায় পাঁচশ দোকান। সবকিছু ভেঙে গেছে। রাজউক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে, এরপরও মার্কেটের যারা দোকান মালিক তারা এটি ভাঙছেন না। এই মার্কেটটিরও একটি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চুন্নু বলেন, ‘সমন্বয়হীনতার অভাবে আবার সমস্যা হবে। আপনি নির্দেশ দেন রাজউক হোক, সিটি করপোরেশন হোক বা ফায়ার সার্ভিস হোক, তারা যেন সম্মিলিতভাবে কাজ করে। এক ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে এক দোকান ভাঙছে, আরেকদিক থেকে সিটি করপোরেশন বলছে নো এটা স্টপ করেন। এটা কিন্তু এলোপাতাড়ি হচ্ছে। কাজেই আপনি নির্দেশ দেন যারা সংশ্লিষ্ট বিভাগ তারা যেন অতি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে একটা ব্যবস্থা নেয়। যাতে এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে না হয়।’