সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি তিন মাসের মধ্যে হস্তান্তরের নির্দেশ
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি তিন মাসের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায় দেন।
আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক। ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭ এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করেন।
রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেওয়ায় ফের ২০২২ সালের ৪ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন। রিটের পর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর আদালত রুল জারি করে আদেশ দেন।
রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। আর বাড়ি সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দেন। পরে পাশাপাশি আদেশ ও কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না করতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আদালতকে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল–জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুদক সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। পরে এ সংক্রান্ত রুলের ওপর ৩ মার্চ শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন।