বাড়িওয়ালাকে কুপিয়ে হত্যা, ভাড়াটিয়ার দায় স্বীকার
রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ায় ভাড়াটিয়ার রুমে তাস খেলা ও মাদক সেবনকে কেন্দ্র করে মো. রনি (৩০) নামের এক বাড়িওয়ালাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ভাড়াটিয়া মো. মোরশেদ আহাম্মেদ (৩৭) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ রোববার (২৬ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জসিম উদ্দিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এই আসামি। এদিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি মো. মোরশেদ আহম্মেদকে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এর আগে গত শনিবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে ভাড়াটিয়া মো. মোরশেদ আহাম্মেদ ওই বাড়িওয়ালাকে কুপিয়ে হত্যা করেন।এরপর তিনি জামালপুর চলে যান। পরে মাদারগঞ্জ উপজেলার চর ভাটিয়ালি এলাকা থেকে অভিযুক্ত মোরশেদকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে আজ রোববার দুপুরে তেজগাঁও থানায় সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আজিমুল হক বলেন, তেজগাঁও নাখালপাড়া শিয়ামাজার ঢালে রনির বাসায় ভাড়া থাকতেন মোরশেদ। ভাড়াটিয়ার রুমে প্রায় সময়ই বাইরের মানুষ এনে তাস খেলতেন ও মাদক সেবন করতেন রনি। এ নিয়ে বাড়িওয়ালার সঙ্গে ভাড়াটিয়া মোরশেদের বিরোধ তৈরি হয়। শনিবার রাত আড়াইটার দিকে রনি ও তার বন্ধুরা মোরশেদের রুমে তাস খেলছিলেন। এ নিয়ে রনির সঙ্গে মোরশেদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায় মোরশেদ রনিকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে রনিকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ডিসি আজিমুল বলেন, ঘটনার পর মোরশেদ জামালপুরে তার গ্রামের বাড়িতে চলে যান। নিহত রনির মা আসিয়া খাতুন মায়া বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চর ভাটিয়ালি এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোরশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার মোরশেদকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিসি আজিমুল বলেন, মোরশেদ যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেই বাসার মালিক রনির পরিবার। মোরশেদ মোটরসাইকেল দিয়ে রাইডশেয়ারিং করতেন। তার ভাড়া নেওয়া রুমে বাড়ির মালিক রনি ও তার বন্ধুরা তাস খেলতেন ও মাদক সেবন করতেন। এ কারণে মোরশেদকে প্রায়ই দেরিতে ঘুমাতে হতো। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার বাকবিতণ্ডা হয়।
‘গত ২৫ মে দিনগত রাতেও ওই রুমে রনি ও তার বন্ধু মশিউর, বায়জুদুল ইসলাম, একিন, অবিতক তাস খেলছিলেন। ওই রাতেও মোরশেদ বাসায় ফেরার পর তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।’
ডিসি আজিমুল আরও বলেন, এক পর্যায়ে মোরশেদ ছুরি দিয়ে রনিকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় রনির বন্ধুরা চিৎকার করলে রনির ভাই রফিক ছুটে আসেন। তিনি বাধা দিতে চাইলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান মোরশেদ। গুরুতর আহত অবস্থায় রনি ও রফিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রনিকে মৃত ঘোষণা করেন।