উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যায় পৌনে ৮ লাখের বেশি শিশু ক্ষতিগ্রস্ত, ইউনিসেফের উদ্বেগ
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ। এক বিবৃতিতে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শেলডন ইয়েট বলেন, ‘বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ইউনিসেফ গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আকস্মিক এই বন্যায় এরইমধ্যে ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে সাত লাখ ৭২ হাজারের বেশি শিশু।’
শেলডন ইয়েট আরও বলেন, ‘বন্যার পানি বাড়তে থাকলে শিশুরা সবচেয়ে বেশি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। পানিতে ডুবে মৃত্যু, অপুষ্টির শিকার ও মারাত্মক পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়া, বাস্তুচ্যুতির আতঙ্ক এবং জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রে নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ে।’
শিশুদের নিরাপত্তা ও মঙ্গল নিশ্চিত করা ইউনিসেফের অগ্রাধিকার বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। জানানো হয়, ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকার এবং মাঠপর্যায়ের পার্টনারদের সঙ্গে সমন্বয় ও অংশীদারিত্বে গত পাঁচ দিনে প্রায় এক লাখ বন্যাকবলিত মানুষের কাছে নিরাপদ পানি বিতরণ করেছে। পাশাপাশি তিন হাজারেরও বেশি ১০ লিটারের পানির পাত্র দেওয়া হয়েছে।
পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে তা মোকাবিলায় বিভিন্ন গুদাম থেকে জরুরিভিত্তিতে অতিরিক্ত জরুরি সরঞ্জাম আনা হবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়।
শেলডন ইয়েট বলেন, ‘সিলেট বিভাগে ৮১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়া ৫০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। আর প্রায় ১৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিক বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
কঠিন এই সময়ে সম্ভাব্য সহিংসতা নিরসনে এবং ট্রমা বা আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে শিশুদের সহযোগিতা করতে শিশু সুরক্ষা সমাজকর্মীরা পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
নদীগুলোর পানি বিপজ্জনক উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে উল্লেখ করে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে।