তিস্তা চুক্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মির্জা ফখরুলের ক্ষোভ প্রকাশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্যসমাপ্ত ভারত সফর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের স্বার্থের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
আজ রোববার (২৩ জুন) এক দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বর্তমান সরকারকে অবৈধ ও দখলদার আখ্যা দিয়ে তাদের সম্পদ বিক্রি করে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার অভিযোগ তোলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণের অনির্বাচিত তথাকথিত প্রধানমন্ত্রী ভারতের সঙ্গে ১০টি চুক্তি সই করেছেন। আমরা লক্ষ্য করেছি, এগুলো মূলত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, এর আগে বলা হয়েছিল যে ভারত আরও চুক্তি সই করবে এবং ভারতে প্রযুক্তিগত দল পাঠানো হবে। কিন্তু আমাদের সমস্যা সমাধানে কোনো চুক্তি সই হয়নি। আমরা তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছি না, তবে এ বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। তিস্তা চুক্তি সইয়ের পরিবর্তে ভারত বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের তিস্তা নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে অংশগ্রহণ এবং শিগগিরই এখানে একটি কারিগরি দল পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রশ্নটি স্ফটিকের মতো পরিষ্কার, যেহেতু আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তা নদীর পানি সুষ্ঠু বণ্টনের দাবি জানাচ্ছি। আমরা ভারতের সঙ্গে প্রতিটি অভিন্ন নদী থেকে জলের ন্যায্য হিস্যা চাই। এটা আমাদের অধিকার, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের পানি সমস্যা সমাধানে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা (সরকার) ভারতের আজ্ঞাবহ হয়ে পড়েছে।’
সরকার ভারত ছাড়াও অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি আজ্ঞাবহ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে বুলেট আসছে, তারপরও তারা তার জবাব দিতে পারছে না। এই অপদার্থ আজ্ঞাবহ শাসন আমাদের বুকের ওপর ভারী হয়ে আছে।’
রোববার (২৩ জুন) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত রোগমুক্তি কামনা করে দেশব্যাপী দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি।
উল্লেখ্য, ভারতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে শনিবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে শুক্রবার নয়াদিল্লি যান তিনি। সফরের দ্বিতীয় দিনে, ঢাকা ও নয়াদিল্লি ১০টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে, যার মধ্যে সাতটি নতুন এবং তিনটি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ককে আরও সংহত করতে পুনর্নবায়ন করা হয়েছে।