বস্তার গায়ে মিনিকেট লিখলে নতুন আইনে জেল-জরিমানা : খাদ্যমন্ত্রী
মিনিকেট নামে দেশে কোনো ধান নেই, চালও নেই; তাই কেউ বস্তার গায়ে মিনিকেট চাল লিখলে নতুন আইনে জেল-জরিমানা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
আজ সোমবার (২১৪ জুন) দুপুরে নিয়ামতপুর সরকারি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ‘কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষকরাই দেশের প্রাণ। কৃষিই দেশের মূল চালিকাশক্তি। কৃষিতেই আমাদের সমৃদ্ধি। কৃষক বেঁচে থাকলে এ দেশে খাদ্যের অভাব হবে না- দুর্ভিক্ষও হবে না।’
সাধন চন্দ্র মজুমদার আরও বলেন, ‘সরকার কৃষিকে যান্ত্রীকীকরণের পদক্ষেপ নেওয়ায় ফসল উৎপাদনে বিপ্লব ঘটেছে। এখন স্বল্প সময়ে সীমিত জমিতে অধিক ফসল ফলাতে সক্ষম হচ্ছে কৃষক।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি ও উচ্চফলনশীল জাতের সঙ্গে কৃষককে পরিচিত করা হচ্ছে। কৃষকও সাদরে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল গ্রহণ করছে। ধান উৎপাদন ও ভোগে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয়। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনেও তৃতীয় স্থানে আমরা।’
আওয়ামী লীগ কৃষকবান্ধব সরকার। শেখ হাসিনা কৃষকের বন্ধু উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি প্রণোদনা দিয়ে- ভর্তূকি দিয়ে কৃষকের পাশে আছেন তিনি। সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদ হলে কৃষির জমি বাড়বে, উৎপাদনও বাড়বে। ইতোমধ্যে মডেল হিসেবে অনেক স্থানে সমবায় ভিত্তিতে চাষাবাদ হচ্ছে। এই পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে দিন দিন।’
ধানের দাম কম বলে অভিযোগ ছিল। সরকার ধানের দাম ৩০ টাকা থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই, চালও নাই। নতুন আইনে বস্তার গায়ে দাম লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে এবং মিনিকেট লিখলে সর্বনিম্ন পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।’
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় সাত কোটি মানুষ পান্তার পানি খেয়ে পার করেছি। এখন দেশের মানুষ ১৭ কোটি পার হয়ে গেছে, তবুও খাদ্যের অভাব নেই। প্রযুক্তি ও কৃষির সমন্বয়ের ফলে গত বছর এক কেজি চালও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়নি, এ বছরও হবে না।’
নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ মোর্শেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ফরিদ আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদ হাসান বিপ্লব এবং জেলা আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক মো. আবেদ হোসেন মিলন।
স্বাগত বক্তব্য দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত এ মেলায় প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান (স্টল) অংশগ্রহণ করছে। স্টলগুলোতে কৃষি যন্ত্রপাতি ও উন্নত প্রজাতির বিভিন্ন ফসল প্রদর্শন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে এক হাজার ২৫০ কৃষকের মধ্যে উফশী জাতের ধানের বীজ বিতরণ করা হয়।
এর আগে খাদ্যমন্ত্রী নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।