জনপ্রশিক্ষণের মাধ্যমে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের অনেক রোগী বাঁচানো সম্ভব : বিশেষজ্ঞ মত
জনপ্রশিক্ষণের মাধ্যমে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট অনেক রোগীকে বাঁচানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, প্রাথমিক প্রশিক্ষণ থাকলে হঠাৎ বন্ধ হওয়া হৃৎপিণ্ড (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হার্ট ফেইলিউর) সচল করা সম্ভব। আজ সোমবার (২৪ জুন) সংসদের সভাকক্ষে ‘অসংক্রামক রোগ (এনসিডি) প্রতিরোধ, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিষয়ে সচেতনতা এবং সিপিআর প্রশিক্ষণ কর্মশালায়’ এমন তথ্য দেন তারা। এর আয়োজনে ছিল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পার্লামেন্টারি স্ট্যাডিজ (বিআইপিএস) ও আইপিডিআই ফাউন্ডেশন।
আইপিডিআই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতি বছর ১৮ মিলিয়ন মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। তার মধ্যে তিন লাখ ২৪ হাজার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। যেকোনো ব্যক্তি কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে তার মৃত্যু প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের ১০ মিনিটের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর সিপিআর প্রয়োগ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিতে পারলে সেই ব্যক্তির মৃত্যু অনিবার্য। ফলে এই জরুরি অবস্থায় বাবা, মা, ভাই, বোন, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান, গৃহ পরিচারিকা, ড্রাইভার কিংবা মালীকেই চিকিৎসকের ভূমিকায় অংশ নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সবাইকে প্রাথমিক করণীয় বিষয়ে প্রশিক্ষিত হতে হবে। আর সেই কাজটিই করে যাচ্ছে আইপিডিআই ফাউন্ডেশন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, সম্মানিত অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা। বিশেষজ্ঞ প্যানেল আলোচক ছিলেন আইপিডিআই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমদ। তারা তথ্য চিত্র ও হাতে কলমে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দেন। এতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বিআইপিএস কর্মচারীরা অংশ নেন।
স্পিকার বলেন, যেভাবে আমরা সারা বিশ্বে হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্যকরি। এর কারণে প্রতিনিয়তই অনেক দুঃসংবাদ শুনতে পাই। রোগ শনাক্ত হলে ওষুধ দিয়ে প্রতিকারের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এ রোগ যাতে না হয়, সেজন্য আগেই প্রতিরোধ ও প্রতিকার প্রয়োজন। সেটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ধরন এবং খাদ্যাভ্যাস নিবিড়ভাবে যুক্ত। কাজেই আমরা যদি হৃদরোগ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারি, তাহলে এ রোগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হব।
স্পিকার আরও বলেন, হাঠাৎ করে আপনার আশেপাশে কেউ যদি হৃদ রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে আপনার করনিয় (প্রথমিক প্রশিক্ষণ) জানা থাকলে একটি প্রাণ ফিরে পেতে পারে। ফলে শুধুমাত্র নির্বিকার দর্শকেরমত দাড়িয়ে থেকে আক্রান্তকারির কষ্টটা না দেখে, কিভাবে তার সহায়ক হতে পারেন সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ (আইপিডিআই) দেওয়া হচ্ছে। আমি মনে করি, এ প্রশক্ষণ থেকে আমরা সবাই উপকৃত হবে এবং বিস্তারিত জানতে পারবো। পর্যাক্রমে এ বিষয়ে অন্যাদের জন্য প্রশিক্ষণের আয়োজন করবো।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যেকোনো বিষয়ে সচেতনাতাই হলো বড় প্রতিরোধ। দেশে অসংক্রমক রোগ প্রতিরোধে প্রান্তিকপর্যায়ে সচেতনতা পৌঁছাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বিষয়ে সচেতনাতায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনসাধারণের মধ্যে অনেকেই জানেন, জ্বরের প্রাথমিক চিকিৎসা প্যারাসিটামল। একইভাবে হৃদরোগ বা হার্ট ফেইলিউর বিষয়ে প্রথমিক করিনীয় জানা থাকলে জীবনের ঝুঁকি অনেক কমে আসবে।