গোপালগঞ্জে ৩৮০ কোটি টাকার পাট উৎপাদনের আশা
গোপালগঞ্জে ৩৮০ কোটি ৮১ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ৪৭ হাজার ৬০২ মেট্রিক টন পাট উৎপাদনের আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ইতিমধ্যে পাট কাটা শুরু হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে পুরোদমে পাট কাটার মৌসুম শুরু হয়ে যাবে। তবে এখানও বাজারে সেভাবে নতুন পাট আসতে শুরু করেনি।
মুকসুদপুর উপজেলার পাশারগাতী গ্রামের পাটচাষী তমিজ উদ্দিন মিয়া (৬০) জানান, এ বছর এক হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। মৌসুমের শুরুতে ক্ষেতের পাট তাপ প্রবাহের মধ্যে পরে। তখন মনে হয়েছিল পাট ভাল হবে না। পরে আবহাওয়া অনুকূলে চলে আসে। তাই পাটের ফলন বেশ ভাল হয়েছে।
উপজেলার গোহাল গ্রামের পাট ব্যবসায়ী সজল সাহা বলেন, নতুন পাট এখনও বজারে সেভাবে আসতে শুরু করেছি। কিছুদিনের হাটে নতুন পাটের আমাদানি শুরু হবে। গত বছরের পুরাতন পাটের কেনা বেচা হচ্ছে। প্রতিমণ পাট আমরা তিন হাজার ২০০ টাকা থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকা দরে ক্রয় করছি। পাটকলগুলো এখনও পাট ক্রয় শুরু করেনি। তারা প্রতিযেগিতা করে পাট ক্রয় শুরু করলে তখন পাটের বাজারে তেজিভাব দেখা দিতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপপরিচালক আ. কাদের সরদার বলেন, ‘চলতি পাট মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলায় ২৩ হাজার ৮০১ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় পাঁচ হাজার ১৭২ হেক্টরে, মুকসুদপুর উপজেলায় আট হাজার ৫৬০ হেক্টরে, কাশিয়ানী উপজেলায় সাত হাজার ৬২২ হেক্টরে, কোটালীপাড়া উপজেলায় ৮৯৭ হেক্টরে ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় এক হাজার ৫৫০ হেক্টরে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দুই মেট্রিক টন। সে হিসেবে ২৩ হাজার ৮০১ হেক্টরে ৪৭ হাজার ৬০২ মেট্রিক টন পাট উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।’
আ. কাদের সরদার আরও বলেন, ‘গড়ে প্রতিমন (৪০ কেজি) পাট তিন হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে পারে। সেই হিসেবে এক কেজি পাটের দাম পরে ৮০ টাকা। আর এক মেট্রিক টন পাটের দাম হবে ৮০ হাজার টাকা। জেলার ৪৭ হাজার ৬০২ মেট্রিক টন পাট ৩৮০ কোটি ৮১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপপরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, ‘পাটে গোপালগঞ্জ জেলায় ১২ হাজার কৃষকের মধ্যে প্রণোদনার পাট বীজ বিতরণ করা হয়। এসব বীজ দিয়ে কৃষক ১২ হাজার বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেন। এতে জেলায় পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাজারে পাটের দাম ভাল রয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর কৃষক পাটের ভাল দাম পেয়ে লাভবান হবেন।’