জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হতে পারে আজ
নির্বাহী আদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ হতে পারে আজ বুধবার (৩১ জুলাই)। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, নিয়ম অনুযায়ী জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। আইন মন্ত্রণালয় আইনগত মতামত দেওয়ার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে। আজ বুধবার এই প্রক্রিয়া শেষ করার চেষ্টা থাকবে তাদের।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় জামায়াত ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জড়িত থাকার অভিযোগ করে আসছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা। এমন পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সভায় জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে একমত হন শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সেই বৈঠক হয়। জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর সরকারের নির্বাহী আদেশে আজ জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
গতকাল সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছেন, জামায়াত-শিবিরকে বুধবারের মধ্যে নিষিদ্ধ করা হবে। নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি অত্যন্ত স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রীও তাকে (আইনমন্ত্রী) নির্দেশ দিয়েছেন বুধবারের মধ্যে একটি ব্যবস্থা নেওয়ার।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, যারা কোটা আন্দোলন করেছিলেন, তারা কিন্তু বলেছেন, এই সহিংসতার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সরকারের কাছে তথ্য-উপাত্ত আছে জামায়াত, বিএনপি, ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের যারা জঙ্গি, তারাই এটা (সহিংসতা) করেছে। দলটিকে (জামায়াত) যদি নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ও রাজনীতিরও অনেক উন্নতি হবে।
গতকাল বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবারই জঙ্গি উত্থান বলুন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বলুন, এগুলো করে যাচ্ছে তারা (জামায়াত-শিবির)। কাজেই এ নিয়ে ১৪ দলের বৈঠকে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হওয়ার জন্য যেসব প্রক্রিয়া হওয়া দরকার, সেগুলো চলছে।’
আদালতের রায়ে নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। জামায়াতের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলেও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর আপিল খারিজ করে দেন। ফলে দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।