নিহত আবু সাঈদের বাড়িতে শনিবার যাচ্ছেন ড. ইউনূস
দিনটি ছিল ১৬ জুলাই, মঙ্গলবার। রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান পুলিশ সদস্যরা। সংঘর্ষ যখন তুঙ্গে, তখন এক যুবক দুহাত দুদিকে প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে গেলেন রাস্তায়। এক হাতে তার ধরা ছিল লাঠি। তার আহ্বান যেন বলছিল, গুলি চালালে আমার বুকে চালান, আমার বন্ধুদের বুকে নয়! তার হয়তো বিশ্বাস ছিল, এই আহ্বানে শান্ত হয়ে আসবে পরিবেশ। কেউ গুলি চালাবে না। কিন্তু, তা হলো না। বুলেট তেড়ে এসে বিঁধে গেল তার বুকে। এরপরও দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। তারপর আবারও গুলি। পরে রাস্তার ডিভাইডার পার হলেন। শান্ত, নির্মল চেহারার যুবক বসে পড়েন সেখানেই। তারপর ঢলে পড়েন রাস্তায়। পরে জানা যায়, তিনি মারা গেছেন। তারপর থেকেই শহীদের খেতাব ও আইকনিক ছবি হয়ে ওঠেন তিনি।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন সেই যুবক। নাম—আবু সাঈদ। সেই সাঈদের পরিবারের সঙ্গে আগামীকাল শনিবার রংপুরে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুজন ছাত্র প্রতিনিধিও যাচ্ছেন।
আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান পরিষদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘাতে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সারা দেশে আন্দোলন জোরদার হয়। একপর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।
এরপর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাসহ এ সরকারের সদস্যসংখ্যা ১৭। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর বঙ্গভবনের দরবার হলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ১৩ জন (তিনজন ঢাকার বাইরে থাকায় ওদিন শপথ নিতে পারেননি) উপদেষ্টাকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।