টানা বৃষ্টিতে ডুবেছে নোয়াখালী, ভোগান্তি
টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর অনেক এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। পানি ঢুকেছে জেলার অনেক সরকারি দপ্তরেও। টানা বৃষ্টিতে শহরে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতার। বাসাবাড়ির ভেতরেও পানি ঢুকে গেছে। এতে সাধারণ মানুষ সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন।
আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, জেলা শহর মাইজদীর অনেক বাড়িঘর ও সড়ক, জেলা সশস্ত্র বোর্ড, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সার্কিট হাউস রোড ও রেকর্ড রুমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিচ তলায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিন শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান খাল ও নালা দিয়ে ধীরগতিতে পানি নামার কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান পর্যবেক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে ১১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত রাতের দিকে কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টি বন্ধ থাকলেও আজ সকাল থেকে টানা বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। আরও দুয়েক দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
ঘুরে দেখা যায়, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে, জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণ, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ভবন, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়, নোয়াখালী প্রেসক্লাব ভবনের নিচতলা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া জেলা শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হরিনারায়ণপুর, কৃষ্ণরামপুর, মাস্টারপাড়া, সোনাপুরসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় সব সড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে।
জেলার প্রধান সড়ক চৌমুহনী-মাইজদী-সোনাপুর সড়ক, টাউন হল মোড়, জামে মসজিদ মোড়সহ কয়েকটি অংশে পানি ওঠায় আশপাশের দোকানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেক দোকানি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কের পাশের পানি নিষ্কাশনের নালাগুলো উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বৃষ্টির পানির সঙ্গে নালার ময়লা পানি মিশে একাকার হয়ে গেছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ পুকুর ও জলাশয় ডুবে গেছে।
নোয়াখালী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানায়, শহরের প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ নির্মিত ড্রেনটি অনেকটাই ভরাট হয়ে গেছে। কিন্তু ড্রেনের ওপরের স্ল্যাব সরানোর সুযোগ না থাকায় ড্রেনটি পরিষ্কার করা যাচ্ছে না। জেলা প্রশাসন ও সওজের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। ড্রেনটি পরিষ্কার করা গেলে পানিনিষ্কাশন ত্বরান্বিত হবে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে জেলার সদর, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর উপজেলার বেশির ভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক। এতে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে আমন ধানের বীজতলা। এ ছাড়া মাঠে পানি বেশি থাকায় অনেক এলাকার কৃষক খেতে আমন লাগাতে পারছেন না।