নিহত সাব্বিরের বাড়িতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন চাঁদপুর শহরের রঘুনাথপুর এলাকার হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন সাব্বির। গতকাল মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলে তাঁর বাড়িতে যান শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। তাদের সামনে নিহত সাব্বিরের বাবা মো. জসিম রাজা এবং মা ছেলের স্মৃতিকথা তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশে সৃষ্টি হয়। পুলিশের গুলিতে নিহত সাব্বিরের মায়ের পাশাপাশি কান্নায় ভেঙে পড়েন আগত শিক্ষার্থীরাও। পরে নিহত সাব্বিরের কবর জিয়ারত শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তার পরিবারের হাতে নগদ অর্থ এবং বিভিন্ন উপহার তুলে দেওয়া হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এ সময় সাব্বিরের মাকে বলেন, গত ১৯ জুলাই মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে চিড়িয়াখানা রোডে আমাদের ভাই হাফেজ সাজ্জাদ হোসেন সাব্বির (১৮) শহীদ হন। সে আমাদের ছাত্রদের পরিবারের একজন সদস্য। আজকে আমরা যারা আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি, তারা সবাই আপনার সন্তান। এমন শত শত শহীদ সাব্বিরের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ বৈষম্য থেকে মুক্ত হতে যাচ্ছে।
শিক্ষার্থীর আরও বলেন, আমরা আপনাকে কথা দিচ্ছি, আপনার সন্তান হিসেবে আমরা চাঁদপুরের সব শিক্ষার্থী আপনার পাশে থাকব। আপনি যেকোনো প্রয়োজনে এই সন্তানদের ডাকবেন, আমরা ছুটে আসব। আমরা শহীদ সাব্বিরের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাত দান করেন।
সাব্বিরের বাবা মো. জসিম রাজা বলেন, ‘আমার সন্তান দেশের জন্য, মানুষের অধিকারের জন্য শহীদ হয়েছে। এটি একদিকে যেমন বেদনার, অপরদিকে গর্বের। আমার সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি চাই না আর কোনো মায়ের বুক এভাবে খালি হোক। আমার সন্তানদের জীবনের বিনিময়ে হলেও বাংলাদেশ থেকে সব অন্যায়, অবিচার, গুম, খুন, বৈষম্য, দুর্নীতিমুক্ত হোক। যে শিক্ষার্থীরা মানুষের অধিকার আদায়ের রাজপথে নেমে এসেছে তারা আমাদের দেশের সম্পদ। কেউ যেন আর তাদের বুকে গুলি না চালায়।’