ভেঙে গেছে গোমতী প্রতিরক্ষা বাঁধ
ভারত থেকে নেমে আসা তীব্র ঢল ও অতি বৃষ্টির কারণে ভেঙে গেছে কুমিল্লার গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দিনগত রাত পৌণে ১২টার দিকে জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া নামক স্থান দিয়ে বাঁধটি ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকে।
বাঁধ ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশরী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান।
খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকে ওই স্থানের নিচ দিয়ে পানি বের হচ্ছিল। স্থানীয় লোকজন বালুর বস্তা ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু রাত পৌণে ১২টার দিকে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকে। বাঁধের অন্তত ৩০ ফুট ভেঙে গেছে।’
এদিকে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ষোলনল, পীরযাত্রাপুর, সদর ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হচ্ছে।’
ভারতী তীব্র ঢলে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কায় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে এলাকায় মাইকিং করা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালে গোমতীর পানি বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। কিন্তু গত দুই দিনে পানি বৃদ্ধির হিসাব অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে গত ২৭ বছরের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে গোমতী।
এর আগে, গত বুধবার রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় গোমতী বাঁধ ভাঙার খবরে দিশেহারা পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিভিন্ন এলাকা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে এমন খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্ক ছড়ায় কুমিল্লাবাসীর মাঝে। বৃহস্পতিবার ভোরে কুমিল্লার গোমতী নদীর তীরবর্তী এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বাঁধের ওপর সড়কে অবস্থান নিয়েছে প্লাবিত হওয়া বাড়িঘরের লোকজন। গোমতী নদীর বাঁধের ভেতরের সব গ্রাম তলিয়ে গেছে। পানির উচ্চতা ছাড়িয়ে গেছে বাসা-বাড়ির ছাদ ও চালা। কোথাও কোথাও পানির তোরে ভেসে গেছে কাঁচা বাড়িঘর। স্রোতের তোড়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে তাকিয়ে থাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই গোমতী পাড়ের মানুষের।