গোমতী বাঁধ ভেঙে ডুবল ১৫ গ্রাম
কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দিনগত রাত পৌণে ১২ টার দিকে বাঁধ ভাঙার এ ঘটনা ঘটে। বাঁধ ভাঙার খবরে আতঙ্কিত হয়ে ছুটাছুটি করতে গিয়ে দুইজন আহত হয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশরী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে ওই স্থানের নিচ দিয়ে পানি বের হচ্ছিল। স্থানীয় লোকজন বালুর বস্তা ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু রাত পৌণে ১২টার দিকে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকে।
বাঁধ ভেঙ্গে বুড়বুড়িয়া, খাড়াতাইয়া, নানুয়ারবাজার, কিং বাজেহুরা, মিথিলাপুর, শিকারপুর, মহিষমারা, ইছাপুরা, পয়াত, গাজীপুর, কন্ঠনগর, মাওরা, গোপীনাথপুর,জগৎপুর ও গোসাইপুর গ্রাম প্লাবিত হয়।
নদীর বাঁধে আশেপাশের শতাধিক পরিবার ঘর থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৮ টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুড়বুড়িয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা বাড়িঘর হারিয়ে বাকরুদ্ধ।
গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী গোলাম কিবরিয়া জানান, তার বাড়িঘর সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
বুড়বুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, রাত সাড়ে ১১ টায় নদীর পানি হঠাৎ ঘূর্ণন শুরু হয়। তারপর বাঁধ ভাঙতে শুরু করে। প্রথমে বাঁধটি ১০ ফুটের মত ভাঙ্গে। তারপর বড় আকারে ভেঙে পরে।
নানুয়ার বাজার গ্রামের গৃহবধূ আইরিন আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার ১২ বছরের সাজানো সংসার ছিলো। বন্যার পানি সব নিয়ে গেল।’
সোমা রানী বলেন, ‘কোলের বাচ্চাটা নিয়ে সারারাত না ঘুমিয়ে ছিলাম। বাড়িঘর সব ডুবে গেল পানিতে। এখন আমার কই থাকব?’
গোমতীর বাঁধের ভান্তি,কামারখাড়া, বালিখাড়া অংশে পাঁচশতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। তাদের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা আক্রান্ত পরিবারগুলোর দ্রুত থাদ্য ও নিরাপদ খাবার পানি প্রয়োজন।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার জানান, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ষোলনল, পীরযাত্রা পুর, সদর, ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।