সাবেক তিন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা
আইনের অপব্যবহার করার অভিযোগে সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ সাত বিচারপতির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ মামলা দায়ের করেন।
অন্য চার বিচারপতি হলেন—আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. ইমান আলী, মির্জা হোসেন হায়দার, আবু বকর সিদ্দিকী ও মো. নুরুজ্জামান ননী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক এই বিচারপতিরা সবাই ক্ষমতা অপব্যহার করে আইনগত এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে অসাংবিধানিকভাবে আদালত অবমাননা আইন ১৯২৬ লঙ্ঘন করে কোনো শুনানির সুযোগ না দিয়ে আদালত অবমাননার নামে মো. ইউনুস আলী আকন্দকে শাস্তি দেন। প্রথমে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শুনানির সুযোগ না দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রাকটিস সাসপেন্ডসহ আদালত অবমাননার রুল জারি করেন তারা। এরপর ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তিন মাস প্রাকটিস সাসপেন্ডসহ জরিমানা করা হয়।
আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘আদালত অবমাননা হলে আদালত অবমাননা আইন ১৯২৬ এর ৭ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাইকোর্ট শাস্তি দিতে পারে, কিন্তু আপিল দ্বারা নয়। বার কাউন্সিল আইনের ৩২ ধারায় ট্রাইব্যুনাল আইনজীবীর পেশাগত অসদাচরণ প্রমাণিত হলে পেশা সাসপেন্ড করতে পারে, কিন্তু আপিল দ্বারা নয়।’
এই আইনজীবী আরও বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক নয়। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি মামলা করা যায়। কিন্তু সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদে বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় এবং ১০৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়। সংবিধানের ১০৪, ১০৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় না।
আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ বলেন, ‘হাইকোর্টের আদালত অবমাননা রায়ের বিরুদ্ধে অনুচ্ছেদ ১০৩ (২)(গ) অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়। সংবিধান ১০৪ অনুচ্ছেদে বিচারাধীন আপিলে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য যেরূপ প্রয়োজন সেইরূপ আদেশ দিতে পারবে, কিন্তু সরাসরি কোনো মামলায় নয়। সরাসরি আপিল বিভাগে আপিল হয়। উক্ত বিচারাপতিরা ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে শপথ ভঙ্গ করে আমাকে শুনানির সুযোগ না দিয়ে অন্তবর্তী আদেশ দিয়ে প্রাকটিস ডিবার্ড করে, যা সংবিধান ১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানবাধিকার লঙ্ঘন। আপিল বিভাগে ওই শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার খর্ব করা হয়েছে।’