ভ্যানে লাশের স্তূপ তৈরিতে ব্যস্ত আরাফাত আ.লীগের সাবেক নেতার ছেলে
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/08/31/0.jpg)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহতদের লাশ একটি ভ্যানে স্তূপ করছিলেন পুলিশ সদস্যরা। ভাইরাল এই ভিডিতে লাশের স্তূপ তৈরিতে ব্যস্ত পুলিশ সদস্যের নাম আরাফাত হোসেন। তিনি ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়াশোনা করা এই আরাফত আওয়ামী লীগ নেতার ছেলে। জনরোষের ভয়ে আত্মগোপনে এখন তিনি। বন্ধ করে রেখেছেন সরকারি ও ব্যক্তিগত মুঠোফোন।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আরাফাতের বাবা মো. আরিফ হোসেন বদরটুনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং হরিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।
ভাইরাল হওয়া এক মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। এর আগেই ভ্যানে লাশের স্তূপ করে কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন তারা। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা মেলে।
ভিডিওর এক মিনিট ছয় সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার পাশে।
মহাসড়ক থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়ে এসবি অফিসের দিকে চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভেতরে ভিডিওতে থাকা বালুভর্তি বস্তাগুলো এসবি অফিসের দিকে যেতে থাকা ভবনের সামনে স্তূপ করা ছিল। কিন্তু থানা পরিষ্কারের সময় সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ড্রোন উড়িয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। তবে, সেটি পুলিশের ড্রোন কি না তা জানি না। থানার বিভিন্ন গলিতে ছাত্র-জনতা প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পুলিশ লাশগুলো তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, আরাফাত প্রায় দুই বছর ধরে তার টিমে কাজ করছেন। বলা যায় সেকেন্ড ইন কমান্ড। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলায়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়াশোনা করা আরাফাত যোগ দেন পুলিশে।
আশুলিয়া থানার সদ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘শনিবার সকালে আমি ভিডিওটি দেখেছি। এটি অ্যানালাইসিস করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি।’