হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগপত্রে সই করানো অধ্যক্ষকে ফুলের মালায় বরণ
ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো নবকাম পল্লী কলেজের সেই অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে ফুল দিয়ে বরণ করে কলেজে নিয়ে এসেছে শিক্ষার্থীরা। আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে থাকা কোয়ার্টার থেকে গলায় ফুলের মালা পরিয়ে তাঁকে কলেজে নিয়ে আসেন শতাধিক শিক্ষার্থী।
অধ্যক্ষ বাসা থেকে নিয়ে হেঁটেই কলেজে আসেন। এ সময় অধক্ষের পক্ষে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। সেখানে হামলাকারীদের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাঁকে নিজ কক্ষে চেয়ারে বসিয়ে দেন তারা। পরে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
কলেজের শিক্ষার্থী মো. হাসিব শেখ, তারিকুল মুন্সী ও নাইমা আক্তার বলেন, ‘আমাদের অধ্যক্ষ স্যার একজন ভালো মানুষ। মিথ্যা অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগে তাঁকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জোর করে তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে সই নেয় এলাকার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী ও কতিপয় দুষ্কৃতকারী শিক্ষার্থী। এরপর থেকে স্যার অসুস্থ হয়ে বাসায় অবস্থান করছিলেন। আজ সকালে আমরা শিক্ষার্থীরা মিলে স্যারকে তাঁর বাসা থেকে সম্মানের নঙ্গে নিয়ে এসেছি।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা অধ্যক্ষ স্যারকে কলেজে দেখতে চাই এবং তাঁর এ পদত্যাগ মানি না। অন্যায়ভাবে যারা স্যারকে পিটিয়ে পদত্যাগে সই করতে বাধ্য করেছে আমরা তাদের বিচার চাই। আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি, এর মধ্যে যদি হামলাকারী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা না হয়, তাহলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’
অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তাই আমাকে সম্মান দিয়ে বাসা থেকে কলেজে নিয়ে এসেছে। আমি আমার প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। পাশাপাশি আমার উপর হামলা ও জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে সই করানোর খবরটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ পায়। এতে আমরা অনেক উপকার হয়েছে। তাই সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য ইউএনও স্যার, সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
গত ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগপত্রে সই নেন স্থানীয় প্রভাবশালী কাইয়ুম মোল্যা ও কামরুল গাজীর সমর্থকরা।