রমজানের স্মৃতি হাতরে কাঁদছেন বাবা-মা
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয়ের আগ মুহূর্তে ঢাকার বাইপাইলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেখানকার মাছের আড়তে কর্মরত নাটোরের রমজান আলী। গ্রামে থাকা বাবা মায়ের সংসারের সিংহভাগ খরচ চালানো রমজানকে হারিয়ে অনাগত দিনের শঙ্কায় পরিবারটি। পাওয়া না পাওয়ার নানা হিসাবনিকাশের মাঝে স্বজনদের বড় চাওয়া হত্যাকারীদের বিচার।
এভাবে অসময়ে চলে যাওয়া সন্তান রমজান আলির ছবি নিয়ে বসে থাকেন বৃদ্ধা মা অজুফা বেগম। তার প্রতীক্ষা যেনো কখনো শেষ হবে না। রমজান আলী নাটোরের সিংড়া উপজেলার দুর্গম সাঁঐল হাজীপাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক নজরুল ইসলাম ও অজুফা দম্পতির বড় ছেলে। অভাবী সংসারের হাল ধরতে প্রায় ১৫ বছর আগে বাবা-মাকে পেছনে রেখে, রাজধানীতে এসেছিলেন রমজান। এই রাজধানীতে সংসারও পেতেছিলেন তিনি। কাজ করতেন বাইপাইল এলাকার মাছের আড়তে। জুলাই-আগস্টের উত্তাল দিনগুলোতে, যখন আড়তে কাজ নেই, স্বৈরাচারের নিষ্ঠুরতা তাকেও উদ্বেল করে তোলে। যে কারণে, ৫ আগস্ট সকালে গণভবন ঘেরাও কর্মসূচিতে আরও দুই বন্ধুর সাথে যোগ দেন রমজান। সেদিন কিছুটা বেলা গড়াতেই হঠাৎ হত্যাকারীর বুলেটে বিদ্ধ হন রমজান, লুটিয়ে পড়েন সড়কে। সহযোদ্ধারা তাকে উদ্ধার করেন ঠিকই, কিন্তু হাসপাতাল পৌঁছাতে পৌঁছাতে তার জীবনপ্রদীপ চিরকালের মতো নিভে যায়। একই দিন সাভারে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় আরেক হতভাগা গার্মেন্টস কর্মী সোহেল রানার। তার বাড়িও সিংড়া উপজেলার বালাল গ্রামে। এখন স্বজনহারা পরিবারের একটাই দাবি, ঘাতকের উপযুক্ত বিচার। ইতোমধ্যেই পরিবার দুটিকে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে সহায়তা।