রাজধানীতে দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
ফ্ল্যাট নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজধানীর ওয়ারী থানার হাটখোলা এলাকায় দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত আকবর হোসেন (৬০), তার ছেলে মো. আসিফ সুলতান সিফাত (২৭) ও সিফাতের বন্ধু মো. আজাহারুল ইসলাম খান রিয়ানকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সাভার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ওয়ারী থানা পুলিশ।
আজ শনিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ছালেহ উদ্দিন।
গত ১৫ আগস্ট সকালে আল আমিন ভূঁইয়া (৪২) ও তার ছোট ভাই নুরুল আমিন ভূঁইয়াকে (৩৫) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতদের বড় ভাই মো. রুহুল আমিন ভূইয়ার করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ওয়ারী বিভাগের ডিসি ছালেহ উদ্দিন বলেন, মো. রুহুল আমিন ভুইয়ার মেঝ ভাই মো. আলামিন ভূইয়া ওয়ারী থানাধীন ১০ নম্বর হাটখোলা রোডের ‘ক্লাসিক রিয়েল স্টেট কোম্পানির’ কাছ থেকে একটি ফ্ল্যাট কেনার চুক্তি করেন। ওই ফ্ল্যাটের ভূমির মালিক ‘অ্যাডভোকেট আকবর গং’ এর সঙ্গে ২০১৪ সালে রিয়েল স্টেট কোম্পানির মালিক রিপনের চুক্তি হয়। পরবর্তীতে ১০ বছরেও সেই জায়গায় বিল্ডিং নির্মাণ না করায় জায়গার মালিক আকবর গং সেখানে নিজেদের অর্থায়নে দোতলা ভবন নির্মাণ করে।
ডিসি বলেন, যেহেতু বাদীর মেঝ ভাই মো. আল আমিন ভূইয়ার সঙ্গে ক্লাসিক রিয়েল স্টেট কোম্পানির ফ্ল্যাট কেনার চুক্তি হয়েছিল। তাই আল আমিন ভুইয়া তার ছোট ভাই মো. নুরুল আমিন ভূইয়াকে সঙ্গে নিয়ে গত ১৪ আগস্ট বেলা ১১টায় ১০ নম্বর হাটখোলা রোডের সামনে নির্মাণাধীন ফ্ল্যাট দেখতে যায়। তখন আসামি সিফাতের নেতৃত্বে আসামি আকবর, রিয়ান ও পলাতক অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় ভিকটিম আল আমিন ও নুরুল আমিন ভুইয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে স্টিলের ব্যাটন, স্টিলের চাকু, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে বুক, পিঠ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে এলোপাতাড়িভাবে গুরুতর জখম করলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করে। এই ঘটনার বিষয়ে নিহতদের আপন বড় ভাই মো. রুহুল আমিন ভূইয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মো. ছালেহ উদ্দিন বলেন, মামলা হওয়ার পর ওয়ারী থানার একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থলের আশপাশের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং সোর্সের দেওয়া তথ্য মোতাবেক আসামিদের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের অবস্থান নির্ণয় করেন। পরবর্তীতে শুক্রবার ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আকবর হোসেন ও তার ছেলে মো. আসিফ সুলতান সিফাত ও তার বন্ধু মো. আজাহারুল ইসলাম খান রিয়ানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর তাদের তথ্যমতে ওয়ারী থানার ১০ নম্বর হাটখোলা রোডে নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি বৈদ্যুতিক শক স্ট্যান্ড, একটি চাকু, একটি স্টিলের ব্যাটন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।