পঞ্চগড়ে সমন্বয়ককে হুমকি, সাবেক সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে জিডি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বীকে মোবাইল ফোনে হুমকির অভিযোগে পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাঈমুজ্জামান ভুইয়া মুক্তার বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী এই জিডি করেন।
জিডিতে ফজলে রাব্বী উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভুইয়া মুক্তা তাঁর ফেসবুক আইডিতে শুরু থেকেই উসকানিমূলক এবং আক্রমণাত্মক পোস্ট করে আসছেন। শেখ হাসিনা পালানোর পরও তিনি বর্তমান সরকার ও ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর একটি স্ট্যাটাসে মন্তব্য করার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি গত ১৩ অক্টোবর ম্যাসেঞ্জারে অডিও কল দিয়ে উচ্চস্বরে ধমক ও হুমকি দেন।
অডিও কলের আংশিক রেকর্ড হাতে এসেছে প্রতিবেদকের। রেকর্ডটিতে নাঈমুজ্জামানকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার ফেসবুকের ওয়ালে এসে তোমার বাহাদুরি কেন করতে হবে? আমি পঞ্চগড়েই আছি। বেয়াদবি করবানা, আমার সাধারণ সৌজন্য শিষ্টাচার আছে বলেই মনোনয়ন পাবার পর আমাদের এলাকার সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ জমির উদ্দীন সরকারের (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক স্পিকার) দোয়া নিতে গিয়েছিলাম। সাধারণ সৌজন্যতা বজায় রাখবা। রাজনীতি করতে চাও, রাজনীতিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবা, বেয়াদবি করবা না। বেয়াদবি করে কোনো দিন রাজনীতিতে বড় হওয়া যায় না।’
ম্যাসেঞ্জার কলে সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তা রফজলে রাব্বীকে আরও বলেন, ‘আমার শিক্ষা, আমার রুচি, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড এবং পঞ্চগড় নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা- সেটা অর্জন করতে তোমার বহু বছর লাগবে। আমি যতটুকু করছি জীবনে সেটুকু অর্জন করতে তোমার বহু বছর লাগবে। তোমরা মনে করো আমি লুকিয়ে আছি? তোমরা কি শুরু করছ?’
এ বিষয়ে ফজলে রাব্বী বলেন, গত রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ ম্যাসেঞ্জারে সাবেক এমপির কল দেখে কিছুটা অবাক হয়েই রিসিভ করলাম। কিন্তু তিনি যেভাবে কথা বলছিলেন, এরজন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। তাই পুরো ফোন কলটি রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। আমাকে দেখে নিতে পারার ক্ষমতাও তাঁর আছে- বলেছেন।
ফজলে রাব্বী আরও বলেন, এমপি নাঈমুজ্জামান আন্দোলনের সময় থেকেই শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও ছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিনও একটি স্ট্যাটাসে- রক্ত স্নানে শুদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা এসব পরোয়া না করে জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছি, এখন তাকে ছাড় দিয়ে কথা বলব কেন? তার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে আইনি সহায়তার জন্য জিডি করেছি, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রঞ্জু আহম্মেদ জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।