দুর্গাপূজায় ছিল চ্যালেঞ্জ, উদযাপিত শান্তিপূর্ণভাবে
সারাদেশে শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা নিয়ে ছিল অর্ন্তবর্তী সরকারের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, আগে থেকেই ভারতীয় সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এমনকি, ধর্মীয় উপাসনালয়েও হামলা হচ্ছে। এদেশেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনেক সংগঠনকে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে নামতে দেখা গেছে। এমন এক সময় আসে দুর্গাপূজার ক্ষণ। ফলে, মন্দিরসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা দিয়ে পূজা উদযাপন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেয় এই সরকারের কাছে। শেষ পর্যন্ত কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিলেও স্বস্তিতেই শেষ করতে পারেন পূজা উদযাপন।
পূজায় দীর্ঘ ছুটি ছিল আনন্দঘন
এবারের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আরেকটি আনন্দের বিষয় ছিল পূজায় সর্বাধিক ছুটি। বিগত বছরের কোনো সরকারই এমনভাবে দুর্গাপূজায় ছুটি দেয়নি।
মণ্ডপ ছিল ৩২৬৬৬
এ বছর সারাদেশে দুর্গাপূজায় মণ্ডপের সম্ভাব্য সংখ্যা ৩২ হাজার ৬৬৬টি। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫৭টি ও উত্তর সিটিতে ৮৮টি মণ্ডপ ছিল।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন ও প্রধান উপদেষ্টার অভয়বাণী
দুর্গাপূজার নবমীর দিনে গত ১২ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুরান ঢাকার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেছিলেন। এ সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেন এবং সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
দেশি-বিদেশি কুচক্রী মহলের অপপ্রচার নস্যাৎ
সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি পূর্জামণ্ডপে পাহারা দিয়েছে, করেছে নানা সহযোগিতা। যদিও দুর্গাপূজাকে নিয়ে দেশি-বিদেশি কুচক্রী মহলের অনেক অপপ্রচার ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকার মনে করে, সনাতন ধর্মের বড় উৎসব এদেশে এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে আনন্দঘন পরিবেশে পালন হয়েছে। এবার শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে।
দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ঢাকার উত্তরায় স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী ও মুসলিম সম্প্রদায়ের কিছু মানুষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেনাবাহিনী-পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা এবং পূজা কমিটির সম্মিলিত উদ্যোগে মণ্ডপের স্থান বদল করে ঢাকার উত্তরায় আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনার অবসান হয়। পরে ১১, ১৩ ও ৩ নম্বর সেক্টরের পরিবর্তে ৭ নম্বর সেক্টরের রবীন্দ্র সরণিতে (মুগ্ধ চত্বর) দুর্গাপূজা মণ্ডপ করার সিদ্ধান্ত হয়।