মেট্রোরেল স্টেশন চালু সরকারের অভূতপূর্ব সাফল্য
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলার মধ্যে গত ১৮ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টায় মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর পরদিন মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ভাঙচুর করা হয়। এরপর ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ও সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়, মেট্রোরেল চালু করতে লেগে যাবে এক বছর, খরচ হবে অন্তত সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। যদিও অন্তর্বর্তী সরকার এই বক্তব্যকে ভুল প্রমাণ করে।
যা বলেছিলেন ডিএমটিসিএলের সাবেক এমডি ছিদ্দিক
শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা ‘কমপ্লিট সাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। স্টেশনের টিকিট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সবকিছু ভাঙচুর করা হয়।
গত ২০ জুলাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেছিলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন দুটি মেরামত করে পুনরায় চালু করতে এক বছরের মতো সময় লাগতে পারে।’
বিশেষজ্ঞদের বরাতে ওবায়দুল কাদেরের ব্ক্তব্যকে ভুল প্রমাণ করে অন্তর্বর্তী সরকার
২৭ জুলাই তৎকালীন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর-১০ স্টেশন ধ্বংসপ্রাপ্ত। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এটা এক বছরেও যন্ত্রপাতি এনে সচল করা সম্ভব হবে না।’ যদিও গত ২৫ আগস্ট মেট্রো রেলের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয় দুটি স্টেশন বন্ধ রেখে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ গত ২০ সেপ্টেম্বর কাজীপাড়া স্টেশনটি পুনরায় চালু করে। এরপরে ১৫ অক্টোবর চালু হয় মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশন।
মেট্রোরেল মেরামতে যত ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের বাজেট
তৎকালীন সরকারের সময় মেট্রোরেলের দুটি স্টেশনের মেরামতের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল এবং তা করতে প্রায় এক বছর লাগবে বলে জানানো হয়।
অল্প ব্যয়ে স্টেশন চালু করে সাফল্য দেখায় অন্তর্বর্তী সরকার
সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গণমাধ্যমকে জানান, কাজীপাড়া মেট্রো স্টেশন মেরামতে ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর মিরপুর-১০ নম্বর স্টেশন মেরামতে খরচ হয়েছে পৌনে ১৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে মিরপুর-১০ নম্বরের মেট্রোস্টেশন চালু করতে প্রাথমিকভাবে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। মেট্রোর উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ ও বিজয় সরণি স্টেশন থেকে যন্ত্রাংশ এনে স্থাপনের পর স্থানীয় বাজার থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ কিনতে এই খরচ হয়েছে। তবে ওই সব স্টেশন থেকে আনা যন্ত্রাংশগুলো দেশের বাইরে থেকে আনার পর পুনরায় স্থাপন করার জন্য আরও ১৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয় হবে। সব মিলে মোট খরচ হবে ১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকা ‘কমপ্লিট সাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। স্টেশনের টিকিট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ সবকিছু ভাঙচুর করা হয়। ফলে কর্তৃপক্ষ ৩৭ দিন ধরে দুটি স্টেশন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
২৫ আগস্ট থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হলেও ক্ষতিগ্রস্ত ওই দুটি স্টেশন বন্ধ ছিল। পরে কর্তৃপক্ষ কাজীপাড়া স্টেশনটি স্বল্প খরচে মেরামত করে ২০ সেপ্টেম্বর পুনরায় চালু করে।
আ.লীগ সরকার ঘোষিত দেড় বছর কমে আসে ৩৭ দিনে
আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে আভাস দেওয়া হয়েছিল, ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন মেরামত করে মেট্রোরেল চালুতে সময় লাগবে দেড় বছর। অথচ, সেই কথা মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়ে দুটি স্টেশন বন্ধ রেখে মাত্র ৩৭ দিনে চালু মেট্রোরেল চালু করে অন্তর্বর্তী সরকার। ২৫ আগস্ট থেকে শুরু হয় মেট্রোরেল চলাচল। পরে ক্রমান্বয়ে বন্ধ দুটি স্টেশনও চালু হয়। মেরামতের পর ২০ সেপ্টেম্বর চালু হয় কাজীপাড়া স্টেশনটি। এরপর ১৫ অক্টোবর চালু হয় মিরপুর-১০ স্টেশনটিও।